গাজীপুরে রিমান্ডে থাকা আসামির কাছ থেকে ৫ কোটি টাকার চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ!

0
45

গাজীপুর অফিসঃ
গাছা থানা পুলিশ রিমান্ডের আসামির কাছ থেকে ৫ কোটি টাকার চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানায় রিমান্ডে থাকা আসামিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫টি চেকে জোরপূর্বক পাঁচ কোটি টাকার চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, নগরীর ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকায় একটি স্টিল কারখানার সাবেক ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩১ কোটি ৩৩ লাখ ২২ হাজার ২৫১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২ নভেম্বর গাছা থানায় মামলা করে কর্তৃপক্ষ। মামলায় আনিসুর রহমানের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও শ্যালিকাকেও আসামি করা হয়। গাছা থানা পুলিশ গত ১০ নভেম্বর মামলার প্রধান আসামি আনিসুর রহমান ও তার শ্যালিকা এন্তেনুর আক্তারকে গ্রেফতার করে।
আনিসুর রহমানের ছোট ভাই আবুল কাশেম বলেন, আনিসুর রহমানকে দুই দফায় রিমান্ডে এনে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে থাকা অবস্থায় ওই দিন রাতে গাছা থানার একদল পুলিশ বড় ভাই আনিসুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে টঙ্গীর পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ উত্তরপাড়ার বাসায় তল্লাশি চালায়। পুলিশ ঘরের আলমিরাসহ যাবতীয় আসবাবপত্র তল্লাশি করে জমির দলিলপত্র, ভাইয়ের সিটি ব্যাংকের চেক বই ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থানায় নিয়ে যায়। পরে থানায় ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক পৃথক ৫টি চেকে এক কোটি করে মোট ৫ কোটি টাকার স্বাক্ষর নেয়।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইকে রিমান্ডে নিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তাদের উপস্থিতিতেই চেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। আমার ভাই কোনো দুর্নীতি বা কোম্পানির অর্থ আত্মসাৎ করেননি। যে পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে এবং ভাইয়ের যে সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অভিযোগে বর্ণিত সম্পদের কোনো অস্তিত্বই নেই। এমনকি আমাদের সব ভাইদের সম্পত্তি একত্র করলেও মামলায় বর্ণিত অভিযোগের কিঞ্চিত পরিমাণও হবে না।
এ ব্যাপারে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, থানায় রিমান্ডে নিয়ে জোরপূর্বক চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি আমরা আদালতকে অবহিত করি। আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে শোকজ করেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে জবাব দাখিল করলে আদালত আমাদের অভিযোগ খারিজ করে দেন।
তিনি বলেন, ‘সাধারণত বিচারাধীন বিষয়ে আসামিপক্ষের কোনো অভিযোগ থাকলে অনেক সময় তা তদন্ত করে খতিয়ে দেখা বা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুযোগ থাকে না।’
মামলার বাদী ওই কোম্পানির এজিএম (অ্যাডমিন অ্যান্ড সিকিউরিটি) মো. ইউনুস আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দুঃখিত আমি কিছুই জানি না, আমি মামলার বাদী, আমি মামলা করেছি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি গ্রেফতার করেছেন, আদালতে পাঠিয়েছেন, রিমান্ডে নিয়েছেন, আমি শুধু বাদী হিসেবে এতটুকুই জানি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাছা থানার এসআই আহসানুল হক বলেন, জোরপূর্বক চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিচার কার্যক্রম ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে।
গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, এটি একেবারেই অবান্তর ও মিথ্যা কথা। আসামির এ মিথ্যা দাবি আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। আমি যতটুকু জানি, মামলা হওয়ার পর উনি একটা পর্যায়ে আপস করার চেষ্টা করেছিলেন। তখন হয়তো চেক দিয়ে থাকতে পারেন।

আপনার মতামত প্রকাশ করেন

আপনার মন্তব্য দিন
আপনার নাম এন্ট্রি করুন