হবিগঞ্জে ডিসি অফিসের সামনে চা শ্রমিকদের বিক্ষোভ/মালিকানা জটিলতায় ইমাম ও বাওয়ানীর
চা শ্রমিকদের মজুরী বন্ধ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দুইটি চাবাগানে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরী পরিশোধ, বোনাস প্রদান, বাগানের পতিত জমি লীজ বাতিলসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। উপজেলার ইমাম এবং বাওয়ানী চা বাগান শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে শতাধিক শ্রমিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। পরে জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক তাদের অভিযোগ শুনে সার্বিক
সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় বালিশিরা ভ্যালি চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুভাষ দাশসহ চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। চাশ্রমিকরা জানান তাদের বেতন বোনাস না হওয়ায় অনাহারে অর্ধাহারে দিনযাপন করছেন। এ অবস্থা নিরসনের জন্য তারা জেলা প্রশাসকের দারস্থ হন।
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান, বলেন, বাগানটি যাদের লিজ দেয়া হয়েছে তাদের মালিকানা নিয়ে
কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বাগানটিতে কিছু অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি হয়েছে। এতে শ্রমিকদের মজুরী
তারা পরিশোধ করতে পারছে না। এ প্রেক্ষিতে আমরা আইনগত যে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা নেব।
শ্রমিকদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ইমাম ও বাওয়ানী চা
বাগানের দুই হাজার নারী-পুরুষ চা শ্রমিক কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে দুটি বাগানে ম্যানেজার
ছাড়াই চলছে কার্যক্রম। গত ৫ সাপ্তাহ ধরে ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের দুই হাজার শ্রমিকের
মজুরীর ৩৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও রেশন বাবদ ৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা, ২০১৯-২০২০ সালের
শ্রমিকদের এরিয়া বোনাসের ২৩ লাখ ২২ হাজার টাকা, ২০২২ সালের এরিয়া বোনাসের ৬ লাখ
১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করছে না মালিকপক্ষ।
বিষয়টি বাংলাদেশ চা বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানায় চা-শ্রমিকরা। কিন্তু তাতেও মেলেনি সমাধান। এ নিয়ে ইতোপূর্বেও তারা মহাসড়ক অবরোধ করে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল জানান- গত পাঁচ সাপ্তাহ ধরে
চা-শ্রমিকদের বেতন-রেশন দিচ্ছে না মালিকপক্ষ। ফলে চা শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তিনি বলেন, প্রশাসনের লোকজন এসে আশ্বাস দিয়েছেন বাগানে বর্তমান মালিকপক্ষের বন্দোবস্ত
দ্রুত বাতিল হবে এবং বাগানে থাকা প্রায় ৩৯ হাজার কেজি চা পাতা নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার ব্যবস্থা করবেন। দ্রুত বিষয়টি সমাধান না হলে বড়
আকারে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের মালিক জি কে মাইনুদ্দিন চৌধুরী মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।