কালীগঞ্জে বেশি দামে পণ্যদ্রব্য বিক্রির অপরাধে ২০ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

কালীগঞ্জে বেশি দামে পণ্যদ্রব্য বিক্রির অপরাধে ২০ ব্যবসায়ীকে জরিমানা
আহাম্মদ আলী, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য চাউল, পিয়াজ ও কাঁচামাল অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করার অপরাধে কালীগঞ্জে তিন বাজারে অভিযান চালিয়ে ২০ জন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল শনিবার সকালে কালীগঞ্জে তিনটি বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ২০ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক লক্ষ আটানব্বই হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলার তিনটি বাজারে পৃথকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিবলী সাদিক এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জুবের আলম এর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ওই ২০ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের উলুখোলা বাজারের ১৩ ব্যবসায়ীকে, জামালপুর ইউনিয়নের জামালপুর বাজারের ৪ জন ব্যবসায়ী এবং একই ইউনিয়নের দোলানবাজারের ৩ জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পণ্যদ্রব্য বিক্রির অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে অর্থদÐ আদায় করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের উলুখোলা বাজারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিবলী সাদিকের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ১৩ জন ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন অর্থে দÐ দিয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এদিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জুবের আলম এর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জামালপুর বাজারের ৪ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩৩ হাজার টাকা ও দোলান বাজার ৩ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিবলী সাদিক বলেন, এক শ্রেণি বাজার ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য বিনা কারণে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করছে। দাম স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ২০ জন ব্যবসায়ীকে অর্থদÐ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ন্যায্য মূল্যে ভোগ্যপন্য বিক্রয়ের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলায় ১১ সদস্য বিশিষ্ট ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে।

তাছাড়া কালীগঞ্জে ব্যবসায়ীদের,একজনের কাছে আপাতত ২৫ কেজির বেশি চাউল বিক্রি না করতে বলেন– ইউএনও
২৫ কেজি চাউল,৫ লিটার তেল,২ কেজি পিয়াজ,১ কেজি লবন ও ১ কেজির বেশি ডাল কেউ কিনতে চাইলে তাদের না দেয়ার জন্য পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের নিষেধ করে দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। এই পাঁচ ধরনের পণ্যের দিকে নজর রেখে কাজ করতে বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে স্থানীয় বাজারগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের দাম স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মূল্যে পণ্যদ্রব্য বিক্রি এবং একজন ক্রেতার কাছে ২৫ কেজি চাউল,৫ লিটার তেল,২ কেজি পিয়াজ,১ কেজি লবন ও ১ কেজি ডাল এর চেয়ে বেশি বিক্রি না করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সভায় বক্তারা বলেন,প্রতিদিন পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের মূল্য তালিকা তাদের দোকানে ঝুঁলিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিনের মূল্য তালিকা ইউএনও অফিসে পাঠিয়ে দিতে হবে। কোনো ব্যবসায়ী যদি বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে তাদের আর অর্থদÐ দেয়া হবে না। তাদের সরাসরি জেলে পাঠানো হবে বলে পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেন ইউএনও।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শিবলী সাদিক বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্য কিনতে জনগণ যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় এবং বাজারগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জেল জরিমানার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাজারে পণ্য দ্রব্যের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য ১৫ দিনের জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ ধরনের পণ্যের ষ্টক তালিকা প্রতিদিন ইউএনও অফিসে পাঠাতে হবে।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন, কালীগঞ্জ থানা ওসি একেএম মিজানুল হক, কালীগঞ্জ পৌর মেয়র মো. লুৎফুর রহমান, কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পরিমল চন্দ্র ঘোষ, কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম রবিন হোসেন, বাহাদুরসাদী ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দীন আহমেদ, জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান খান ফারুক মাষ্টার, বক্তারপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আকন্দ ফারুক, তুমলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর বাক্কু প্রমুখ।