গাজীপুরের টঙ্গীতে মাদক পরিবহণকালে ২ মাদক কারবারী গ্রেফতার ॥ মিনি ট্রাকসহ ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার!

0
64

গাজীপুরের টঙ্গীতে মাদক পরিবহণকালে ২ মাদক কারবারী গ্রেফতার ॥ মিনি ট্রাকসহ ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার!

জি নিউজ: চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে যে, বেশ কিছুদিন ধরে একটি মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে অবৈধভাবে গাঁজা পাচার করে কৌশলে রাজধানীতে নিয়ে আসছে। এসব মাদক দ্রব্য সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ সারাদেশে। মাদক কারবারিরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে প্রতিনিয়ত অভিনব কৌশল অবলম্বন করে আসছে। তারা মাদক পরিবহনে যাত্রীবাহী বাস, মৌসুমী শাক-সবজি বহনকারী ট্রাক, আম, ধান, গম, ভূট্টা ইত্যাদি পরিবহনকারী গাড়ি ব্যবহার করছে বলে বলে জানা যায়। র‌্যাব-১ মাদক চোরাচালানকারী এসব সিন্ডিকেটকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ২৪ আগস্ট আনুমানিক সোয়া ২টার দিকে র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ব্রাহ্মনবাড়িয়া হতে মাছের রেণু পোনাবাহী ০১ টি মিনি ট্রাকে করে মাদকের একটি চালান গাজীপুরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি মিনি ট্রাকটির গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে এবং সর্বশেষ গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী এলাকায় তাদের অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

এরই প্রেক্ষিতে আভিযানিক দলটি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের পূর্ব পাশে ১৭৫ কাজী মার্কেট এর মডার্ন ফার্নিচার মার্ট নামক দোকানের সামনে অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ মাদক চোরাকারবারী চক্রের সদস্য ১) মোঃ মাইন উদ্দিন (২৫), পিতা- মৃত মুকতল হোসেন, মাতা- মোছাঃ রাহেলা বেগম, সাং- রামচন্দ্রপুর বাল্লাক, পোষ্ট- সালদা নদী, থানা- ব্রাহ্মণপাড়া, জেলা- কুমিল্লা এবং ২) মোঃ শরিফুল ইসলাম (২৪), পিতা- মোঃ কামাল হোসেন, মাতা- মোছাঃ জুলিয়া বেগষ, সাং- নাগাইস, পোষ্ট- নাগাস বাজার, থানা- ব্রাক্ষণপাড়া, জেলা- কুমিল্লা’দ্বয়কে গ্রেফতার করে। এসময় ধৃত আসামী ও তাদের চালিত মিনিট্রাকটি তল্লাশী করে ৩০ কেজি গাঁজা, ০১ টি মোবাইল ফোন, নগদ ৭,০৭০/- টাকা উদ্ধার করা হয় এবং মিনিট্রাকটি জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ মাদক চোরাচালানকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারত হতে অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে গাঁজা নিয়ে আসে। এরপর গাঁজার চালানগুলো বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাকে করে ঢাকাসহ সারাদেশে মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট খুচরা ও পাইকারী মূল্যে বিক্রয় করা হয়। এই চক্রের অন্যতম সদস্য মুন্সিগঞ্জ ও ব্রাহ্মনবাড়িয়া এলকার জনৈক মাদক ব্যবসায়ী। তারা ভারত হতে অবৈধভাবে গাঁজার চালান দেশে নিয়ে আসে। এরপর তাদের সহযোগী ধৃত আসামী মাইন ও শরিফুলের মাধ্যমে মাদকের চালান ঢাকায় নিয়ে এসে সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করে। তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রাকটিতে মাছের রেণু পোনা পরিবহনের আড়ালো কৌশলে মাদকদ্রব্য পরিবহন করে বলে জানায়।

ধৃত আসামী মাইন’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় একজন দর্জি। সে স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জনের লোভে দর্জির কাজ ছেড়ে মাদক ব্যবসা শুরু করে। সে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মাদকের চালান সরবরাহের কাজ করছে। এযাবৎ অসংখ্য মাদকদ্রব্যের চালান সে ঢাকায় নিয়ে এসেছে বলে জানায়। অধিকাংশ চালান গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী ও এর আশেপাশের এলাকায় হস্তান্তর করেছে বলে ধৃত আসামী জানায়। চালান প্রতি সে ৫-৭ হাজার টাকা নিয়ে থাকে।

ধৃত আসামী শরিফুল’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় একজন ড্রাইভার। সে এই চক্রের সাথে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। সে ধৃত আসামী মাইন এর সহযোগীতায় এই মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সাথে যুক্ত হয়। এযাবৎ সে ২০ টিরও বেশী মাদকদ্রব্যের চালান ঢাকায় নিয়ে এসেছে। সে মিনি ট্রাকটিতে মাছের রেণু পোনা পরিবহনের আড়ালো কৌশলে মাদকদ্রব্য পরিবহন করে। পরিবহন ভাড়া ছাড়াও চালানপ্রতি তাকে ৮-১০ হাজার টাকা দেওয়া হয় বলে ধৃত আসামী জানায়।

আপনার মতামত প্রকাশ করেন

আপনার মন্তব্য দিন
আপনার নাম এন্ট্রি করুন