গাজীপুরের সিটি নির্বাচন হবে আগামী জাতীয় রাজনীতির পথ’নির্দেশক-শায়খে চরমোনাই

0
28

গাজীপুরের সিটি নির্বাচন হবে আগামী জাতীয় রাজনীতির পথ’নির্দেশক শায়খে চরমোনাই।

জি নিউজ ডেস্কঃ
গত ৮ এপ্রিল, শনিবার গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী শহীদ বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই) বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতি আজ পথ হারিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের মাঝে নূন্যতম আস্থা ও বিশ্বাস নেই। স্বাধীনতার পর থেকে প্রত্যেকটি সরকার মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। আসন্ন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আমরা আগামী জাতীয় রাজনীতির জন্যে সু-বাতাস তৈরি করতে পারি। আমরা চাই গাজীপুরের সিটি নির্বাচন হবে আগামীদিনের জাতীয় রাজনীতির পথনির্দেশক।
আমরা দেশের জন্যে মানুষের জন্যে কল্যাণের রাজনীতি করি। আমরা সৌহার্দ ও সমঝোতার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এজন্যই আমরা গাজীপুরে একজন দক্ষ এবং চৌকস জাতীয় রাজনীতিবিদকে মনোনয়ন দিয়েছি। যাতে আগামীদিনের জাতীয় রাজনীতিতে গাজীপুর সিটি নির্বাচন ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি দেশের সর্ববৃহৎ সিটি। বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ গাজীপুরে বসবাস করে। এজন্যই গাজীপুর সকলের কাছেই একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরী। অতএব যেনতেন কারো হাতে এই নগরীর দায়িত্বভার দেয়া ঠিক হবে না। গাজীপুর নগরবাসীর সুযোগ এসেছে আসন্ন সিটি নির্বাচনে একজন যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করার। আমি গাজীপুরের শান্তিকামী মানুষকে বিশেষ করে আমাদের নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান করব, আপনারা এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। আপনারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, গাজীপুরের মানুষ যদি ভুল না করে, তাহলে মাওলানা গাজী আতাউর রহমানই হবেন আসন্ন নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র।

তিনি বলেন, আমি আমাদের নেতাকর্মীদেরকে বিশেষভাবে আহবান করব, আপনারা গাজীপুরের মানুষের হৃদয় জয় করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করুন।
ভোটারগণ যাতে ভোট সেন্টারে ব্যাপকভাবে উপস্থিত হয় সেজন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করুন। ইসলামী আন্দোলনের প্রতি, হাতপাখার প্রতি মানুষের মনে যে ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচনে তার প্রতিফলন ঘটান। আমি নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা গাজীপুরে একটি ভালো নির্বাচন করে দেখান যে আপনারা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারেন।

তিনি গাজীপুরের শান্তিকামী মানুষের কাছে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গাজী আতাউর রহমানের জন্য হাতপাখা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।

মেয়র প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, গাজীপুরের মানুষ দেশপ্রেমিক এবং সাহসী। মহান মুক্তিযুদ্ধে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মানুষ সবার আগে সর্বপ্রথম সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত সংগঠক গাজীপুরের মানুষের প্রিয় নেতা গাজীপুরের গর্বিত সন্তান বঙ্গতাজ শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সূচনা যেমন গাজীপুর থেকে হয়েছে তেমনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের সূচনাও গাজীপুর থেকে হবে, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমাদের প্রধান কাজ হল গাজীপুরের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আমরা চাই, গাজীপুরের সম্মানিত ভোটারগণ স্বাধীনভাবে এবং নিরাপদে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারুক। সম্মানিত ভোটারগণ যাকে যোগ্য মনে করবেন, কোনরকম প্রভাবিত না হয়ে তাকেই ভোট দিবেন। আমি কতটুকু যোগ্য সম্মানিত ভোটারগণ তা বিবেচনা করবেন। তবে আমাদের নেতাকর্মীগণ অন্যদের চেয়ে ভালো এবং সবার জন্য নিরাপদ। অতএব,গাজীপুরের ভালো মানুষদেরকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে। গাজীপুরের ভালো মানুষগুলো যদি আজকে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে সমাজবিরোধী, দুর্নীতিবাজ এবং ভোট ডাকাতরা তাদের অপকর্ম করার সাহস পাবে না।

তিনি বলেন, গাজীপুরের ওলামাযয় কেরাম এবং ইসলামপন্থী শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ। অতএব পাশাপাশি সমাজের ভালো মানুষগুলো ঐক্যবদ্ধ হলে গাজীপুর সিটিতে আগামীতে ভালো মানুষের বিজয় সুনিশ্চিত, ইনশাল্লাহ। গাজীপুরের মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের অপেক্ষা করছেন। তিনি স্থানীয় প্রশাসন এবং সাংবাদিকগণকে ইনসাফ বজায় রাখার আহ্বান জানান।

নগরীর শহীদ বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে নগর সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ ফাইজ উদ্দীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নেসার উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ঢাকা বিভাগীয় সংগঠনিক সম্পাদক জি.এম. রুহুল আমীন।

এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন গাজীপুর জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুফতি নাসির উদ্দিন, দ্বীনী সংগঠনে জেলা ছদর আলহাজ্ব আব্দুল মালেক, দলের নগর সহ-সভাপতি মাওলানা হাবীবুর রহমান মিয়াজী, সহ-সভাপতি মাওলানা এম এ হানিফ সরকার, সেক্রেটারি মুফতী হুসাইন আহমদ, জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা আলী আকবর, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান, বামুক জেলা সাধারণ সম্পাদক- মুফতি সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ন সম্পাদক- কাজী মোঃ আলী হায়দার, আন্দোলনের নগর সাংগঠনিক সম্পাদক- এইচ এম সাইদুর রহমান, নগর শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি- মোঃ ইকবাল হোসেন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক- রাসেল আহমেদ, নগর যুব আন্দোলনের সভাপতি- মুফতী ফরহাদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক- মাওলানা আব্দুল হালিম চৌধুরী ও বিভিন্ন থানা নেতৃবৃন্দ।

কোন মন্তব্য নেই