গাজীপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরিষদের ৯ সদস্যের অনাস্থা!

0
44

গাজীপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরিষদের ৯ সদস্যের অনাস্থা!

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন ওই ইউপির ৯ জন সদস্য। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) জেলা প্রশাসক বরাবর অনাস্থা প্রস্তাবের আবেদন করেন তারা।

রোববার (৯ অক্টোবর) অভিযোগকারী ইউপি সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

অভিযোগের অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গাজীপুর সমন্বিত কার্যালয় এবং শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও দেয়া হয়েছে।

অনাস্থা প্রস্তাবকারী ইউপি সদস্যরা হলেন- হারুন খন্দকার , রতন মিয়া, আনোয়ারা বেগম, হাসিনা আক্তার, নাজমুল আকন্দ রনি, সুমন আহম্মেদ, হাদিউল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, মনোয়ারা ইয়াসমিন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বরমী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সদস্যদের ক্ষমতা খর্ব করে স্বেচ্ছাচারিভাবে পরিষদ চালাচ্ছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও প্রকল্পে অনিয়ম, ইউপি সদস্যদের হুমকি ধামকি, পরিষদের নীতিমালা না মানা, মাসিক মিটিং না করা, পরিষদের বার্ষিক হিসাব এবং সম্মানি ভাতা পরিশোধ না করা। নির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে কোনো ধরনের সমন্বয় ও পরামর্শ ছাড়াই পরিষদ চালাচ্ছেন তিনি।

ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ চেয়ারম্যানের নিয়মিত ঘটনা। বিভিন্ন সনদ দিতে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা আদায়, বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করেই অর্থ উত্তোলন ও আত্মসাৎ এবং প্রকল্পের বিল থেকে ৩৯% টাকা কেটে রাখারও অভিযোগ করছেন তারা।

এছাড়াও সদস্যরা চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির ১০ টি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তারা।

ইতিপূর্বে প্রকল্পের কাজ না করেই গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার (৫ অক্টোবর) ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

শ্রীপুর উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এএসএম মোহিতুল ইসলাম ছাড়াও কমিটিতে একজন উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী রয়েছেন। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্টে দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে রাস্তা সংস্কারের নামে প্রকল্প দেখিয়ে অর্ধ কোটি টাকা হরিলুটের প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রচারের পর অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান রাতারাতি অতিরিক্ত শ্রমিক লাগিয়ে আটটি সড়কের মধ্যে দুটি সড়কে আংশিক নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।

বুধবার (৫ অক্টোবর) সরেজমিন দেখা যায়, ৬ লাখ টাকার প্রকল্প পোষাইত থেকে সানঘাটা রাস্তার মাটি কাটার কাজ চলছে। সেখানে বেশ কয়েক শ্রমিককেও দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, ‘নিউজ অইছে, তাড়াতাড়ি চেয়ারম্যান সাহেব কাজ করতে কইছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন: ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

গাজীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান সময় বলেন, ‘গণমাধ্যমের সংবাদ আমাদের চোখে পড়েছে। ০৬ অক্টোবর ডিসিসহ আমরা এটা নিয়ে বসে পরবর্তী করনীয় নির্ধারন করবো।

তবে অভিযোগ ও অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, ‘চেয়ারম্যানের দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে ইউপি সদস্যদের অনাস্থার লিখিত আবেদন করেছেন। অফিস বন্ধ থাকার কারণে এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। স্থানীয় সরকার আইন (ইউনিয়ন পরিষদ) অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

সূত্র- সময় সংবাদ।

আপনার মতামত প্রকাশ করেন

আপনার মন্তব্য দিন
আপনার নাম এন্ট্রি করুন