জি নিউজ ডেস্কঃ গাজীপুরে বাসাভাড়ার নৈরাজ্য নিয়ে তুহিন সারোয়ার বিশেষ প্রতিবেদন।
আলমগীর হোসেন। গাজীপুরে সাইনবোর্ড এলাকার একটি ভাড়াবাসায় থাকেন দেড় বছরের কিছু বেশি সময় ধরে। আসছে নতুন বছর। এই বিষয়টি সামনে রেখে ইতিমধ্যে বাসার মালিক তাকে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী মাস থেকে ১ হাজার টাকা ভাড়া বাড়বে। তিনি বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ বিল বাদে ১১ হাজার টাকায়। আগামী মাস থেকে ভাড়া বৃদ্ধির কারণে তাকে দিতে হবে ১২ হাজার টাকা।এসব কারণেই গাজীপুরের মানুষের কাছে বাড়িভাড়া এখন যন্ত্রণার আরেক নাম। বছরের শেষ মাস ডিসেম্বর এলেই আতঙ্কে থাকেন ভাড়াটিয়ারা। কারণ মৌখিক নোটিশে তাকে জানিয়ে দেয়া হতে পারে, আগামী মাস থেকে বাসাভাড়া বাড়বে। এমনিতেই বাড়িভাড়ার চাপে চ্যাপ্টা হয়ে থাকেন গাজীপুরবাসী। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ গাজীপুরমুখী হচ্ছেন কর্মসংস্থান কিংবা নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায়। অথচ এত মানুষের বসবাসের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। বেশিরভাগ মানুষের আশ্রয়স্থল ভাড়া বাসা। তাই বছরও ঘুরছে বাড়িভাড়াও বাড়ছে। বছরের পর বছর ধরে গাজীপুরে বাড়িভাড়ায় নৈরাজ্য চলছে। প্রায় কোটি মানুষের বসবাসের এই গাজীপুরে এক হিসাব মতে, গাজীপুরে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ ভাড়াবাসায় বসবাস করেন। এদের বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যআয়ের জনগোষ্ঠী। মোট আয়ের সিংহভাগ বাড়িভাড়ায় চলে যায় তাদের। ভাড়াটেদের চাহিদা কাজে লাগিয়ে বাড়ির মালিকেরা ভাড়া বাড়িয়েই যাচ্ছেন প্রতিবছর।
শহিদুল হক একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। টঙ্গী সফিউদ্দিন রোডে একটি ভাড়াবাসায় থাকেন। বাসাভাড়ার নৈরাজ্য নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে লাগামহীনভাবে বাড়ছে বাসাভাড়া। আমি নিজে ৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করি। যার মধ্যে মাসের শুরুতেই সবমিলিয়ে বাসার মালিককে দিয়ে দিতে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে সাড়ে ১৩ হাজার বাসাভাড়া, বাকিটা বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ আনুষঙ্গিক বিল। পরিবার পরিজন নিয়ে বাকি সাড়ে ১৪ হাজার টাকায় আমাকে চলতে হয় পুরো মাস। এই টাকা দিয়ে সংসার চালানো একেবারেই কষ্ট হয়ে যায়।’ তিনি বলেন, ‘এর চেয়ে কম ভাড়ায় সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী কোনো বাসা পাওয়া যায় না। এর মধ্যে প্রতি বছর ভাড়াবাড়াতে থাকেন বাসার মালিকরা। গাজীপুরে যারা কাজের স্বার্থে বসবাস করেন তাদের সবচেয়ে বেশি সমস্যার কারণ অতিরিক্ত বাসাভাড়া। যা দিন দিন বাড়ছেই। এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না।’