গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে চাঞ্চল্যকর গৃহবধু ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার-১

0
40

গাজীপুর অফিস:: গত ১১ জুন গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ ব্যাংক পাড়া মহিলা মাদ্রাসার দক্ষিণ পার্শ্বের এমারত খান এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া ভিকটিম (২৮)’কে বাসায় একা পেয়ে একই এলাকার বাসিন্দা মোঃ ইমরান খান (৩২) জোড়পূর্বক ভিকটিমের ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। বিষয়টি কাউকে জানালে ইমরান খান ভিকটিমকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১০ তারিখ ১৩/০৬/২০১৯ ইং ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১)।

উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচার করে। এ প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১ তাৎক্ষনিকভাবে ধর্ষণকারীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ জুন ২০১৯ তারিখে রাতে সাড়ে ৮টায় র‌্যাব-১ এর আভিযানিক দলটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, উক্ত ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টঙ্গী কলেজ গেইট এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টঙ্গী কলেজ গেইট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণকারী মোঃ ইমরান খান (৩১), পিতা- মৃত ইব্রাহিম খান, সাং- সাতাইশ মধ্যপাড়া, থানা- টঙ্গী পশ্চিম, জিএমপি, গাজীপুর’কে গ্রেফতার করে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ ব্যাংক পাড়া মহিলা মাদ্রাসার দক্ষিণ পার্শ্বের এমারত খান এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া ভিকটিম তার ০৩ কন্যা সন্তান নিয়ে থাকেন। গত ১১ জুন ২০১৯ তারিখে গৃহবধুকে বাসায় একা পেয়ে একই এলাকার বাসিন্দা ইমরান খান জোরপূর্বক ভিকটিমের বাসায় ঢুকে ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মারধর করে। উক্ত ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য ভিকটিমকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিম বিষয়টি তার স্বামী ও এলাকাবাসীকে জানালে ধর্ষক ইমরানের পরিবার বিষয়টি মিমাংসা করতে তৎপরতা শুরু করে। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ধর্ষকের পরিবার ও এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে। বিষয়টি পরবর্তীতে জানাজানি হলে ধর্ষণকারী ইমরান গ্রেফতার এড়ানোর জন্য কৌশলে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে ২০০৫ সালে এসএসসি পাশ করার পর থেকে তার চাচার রেষ্টুরেন্টে কাজ করে। সে ইতিপূর্বেও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমকে কু-প্রস্তাব দেয়। ভিকটিম তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে গত ১১ জুন ২০১৯ তারিখ সন্ধ্যায় সে ভিকটিমকে বাসায় একা পেয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় ভিকটিম ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় তাকে শারীরিক নির্যাতন করে মর্মে ধৃত আসামী স্বীকার করে। ধৃত আসামী একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং সে নিজেও দীর্ঘ দিন যাবৎ ইয়াবা সেবন করে। তার বিরুদ্ধে টঙ্গীসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা আছে। তার বিরুদ্ধে বাড়িঘর ভাংচুর এবং ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনায় একাধিক মামলা চলমান আছে। এসব মামলায় বর্তমানে জামিনে আছে বলে ধৃত আসামী জানায়। এছাড়াও ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় মারামারি, চাঁদাবাজি, নারী শ্লীলতা হানীসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

কোন মন্তব্য নেই