গাজীপুর শ্রীপুরে স্বাস্থ্যসেবা খাতে দুর্নীতি অনিয়ম অসংগতি বরদাস্ত না করার যৌথ ঘোষণা

0
310

মোঃ ইসমাঈল মাস্টার,শ্রীপুর ঘুরেঃ-গাজীপুর শ্রীপুরে স্বাস্থ্যসেবা খাতে দুর্নীতি অনিয়ম অসংগতি বরদাস্ত করা হবেনা মর্মে,স্থানীয় এমপি,উপজেলা চেয়ারম্যান,পৌর মেয়র এবং উপজেলা প্রশাসনের যৌথ ঘোষণা।

সারা দেশে সরকারি/বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের নানা অনিয়ম দূর্নীতি এবং অসংগতি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠেছে সাম্প্রতিক সময়ে,তারই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যসেবা খাতকে সারা দেশে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে গাজীপুর শ্রীপুর উপজেলা/পৌরসভার সকল প্রাইভেট হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিক এবং ডেন্টাল হলে শুদ্ধি অভিযানের এই যৌথ ঘোষণা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা মিললো নানাবিধ অনিয়ম অসংগতি।শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রণয় দাসের কাছে নেই বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিক এবং ডেন্টাল হলের কোন আপডেট তথ্য বা নামের তালিকা।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই চলছে একাধিক প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক,ডায়গনষ্টিক সেন্টার ও ডেন্টাল ক্লিনিক। তারই প্রেক্ষিতে শ্রীপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের অনিয়ম অসংগতি দুর্নীতি বিরোধী অভিযান যে কোন সময় শুরু হবে বলে হুসিয়ারী দিয়েছেন স্থানীয় এমপি,উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়র সহ উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেছেন,আমরা প্রস্তুত,স্বাস্থ্যখাতে কোন অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না,যে কোন সময় শুরু হবে অভিযান।
শ্রীপুর উপজেলার বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিক এবং ডেন্টাল হল কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানতে পারি প্রয়োজনীয় কাজপত্রের সংকট চরমে। যাদের কিছু কাগজপত্র আছে সেগুলোর বেশির ভাগ নবায়ন নেই। তবে অনিয়মকে নিয়ন্ত্রন করতে সরকারী-বেসরকারী একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে বলেও জানা যায়। শক্তিশালী এই সিন্ডিকেটের কর্তাব্যক্তিরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে গোপনে সম্পর্ক রেখে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাখাতকে অনিয়মের মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছেন। বেসরকারী নিয়ন্ত্রক ওই নেতারা স্বাস্থ্যখাতকে জিম্মি করে ব্যবসা করছেন অনেক সময় ধরে।
এ সকল বিষয়ে কথা বলতে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা প্রণয় দাসের দপ্তরে গেলে তিনি জানান, তার কাছে কোন আপডেট তালিকা নেই। বেসরকারী হাসপাতাল মালিক সমিতির এক নেতা তালিকা দিবেন বলে জানান তিনি। তবে কয়েক ঘন্টা পর ওই কর্মকর্তা একটি তালিকা পাঠান যেখানে কয়েকটি হাসপাতালের নাম লেখা থাকলেও ঠিকানা সহ আর কোন তথ্য নেই। শ্রীপুর উপজেলায় কতগুলো বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক,ডায়গনষ্টিক ও ডেন্টাল ক্লিনিক রয়েছে তাও তিনি জানেন না।
অসম্পূর্ন তালিকা দেয়া প্রসঙ্গে গাজীপুরের সিভিল সার্জনের সাথে কথা হলে তিনি বলেছেন,এ রকম তালিকা কেন দিলেন ওই কর্মকর্তা,তা তিনি খতিয়ে দেখবেন। তবে জেলা প্রশাসকের তথ্য বাতায়নে শ্রীপুরে প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক ডায়গনষ্টিক সেন্টার ও চক্ষু হাসপাতাল সহ মোট ২৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে বলা হয়েছে।
জানা গেছে,হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাব চালাতে চাইলে যেসব লাইসেন্স সমূহ বাধ্যতা মুলক দরকার তা নিন্ম রুপ-
১-২ ট্রেড লাইসেন্স
৩ টিন সার্টিফিকেট
৪ ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন
৫ পরিবেশ ছাড়পত্র
৬ ফায়ার সার্ভিস
৭ নারকোটিক লাইসেন্স
৮ ডিলিং লাইসেন্স
৯ ড্রাগ লাইসেন্স
১০ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডায়াগনস্টিক ল্যাব
১১ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হসপিটাল
১২ পরমাণু শক্তি কমিশন এক্সরে লাইসেন্স।

শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান বলেছেন,তার পৌর এলাকায় বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়গনষ্টিক সেন্টারের মোট ২৫টি ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। এ সকল লাইসেন্স হালনাগাদ করা হয়েছে কি না,তা নিয়ে তিনি অভিযান চালাবেন বলে জানান।

শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট সামসুল আলম প্রধান বলেছেন,স্বাস্থ্যখাতের বেহাল দশা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। শ্রীপুরে যেন কোন শাহেদের জন্ম হতে না পারে,সেজন্য খুব দ্রুতই শুদ্ধি অভিযান চালানো হচ্ছে।

গাজীপুর-৩(শ্রীপুর) আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ বলেছেন, সরকারী যথাযথ অনুমতি ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠানকে চিকিৎসা করতে দেয়া হবে না। সরকারী নিয়ম নীতি মেনেই প্রতিষ্ঠান চালাতে হবে। কোন ভেজাল প্রতিষ্ঠান আছে কি না, তার জন্য শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে।

আপনার মতামত প্রকাশ করেন

আপনার মন্তব্য দিন
আপনার নাম এন্ট্রি করুন