চট্টগ্রামে ওসির বিরুদ্ধে কোর্টে সাংবাদিকের মামলা

0
40

জি নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসি নেয়ামত উল্লাহকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম আদালতে ০৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম। চাঁদাবাজি, হত্যা হুমকিসহ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন আইনের ৫(২) এবং ৩৪২/৩৮৫/৩৮৭/৫০২ ধারায় চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আজ মঙ্গলবার এ মামলা দায়ের করা হয়। যার নং (স্পেশাল মামলা) ০১/২০১৯। মামলার বাকি আসামিরা হলেন, ওসি (তদন্ত) রেজাউল করিম, এস.আই মো: কামাল হোসেন, এস.আই এ.টি.এম আমিনুল ইসলাম, এসআই বাসু দেব নাথ, এসআই কাজী মো: জাহাঙ্গীর আলম, এ এস আই মো: আরিফুল ইসলাম, থানার সোর্স শেখ ফোরকান এবং সোর্স বিকাশ চৌধুরী। বাদীর আইনজীবী রফিকুল আলম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়,সিটিজি ক্রাইম টিভির সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম গত ১৭ নভেম্বর ক্যামেরাম্যান ও একজন শিক্ষানুবীশ নারী সাংবাদিকসহ পটিয়ায় গৃহবধূ চুমকি হত্যার ঘটনার ব্যাপারে জানতে পটিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ নেয়ামত উল্লাহর কাছে গেলে তিনি ব্যক্তিগত কক্ষে নিয়ে যান।তারপর তথ্য না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করাসহ নানারকম হুমকি প্রদান করে। এমনকি ওসি নেয়ামত বাদীর পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান এর নাম ধরেও অশ্লীল মন্তব্য করে।এরপর রাশেদুল ইসলাম ১৮ নভেম্বর চুমকি হত্যার ধুম্রজাল এবং পটিয়া থানা পুলিশের অসহযোগিতার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। ঐদিনই পটিয়া আদালতের নির্দেশে চুমকি হত্যা মামলা নেয় পটিয়া থানা। গত ২৭ নভেম্বর দুপুরে রাশেদুল ইসলাম এর সহকর্মী সিটিজি ক্রাইম টিভির সাংবাদিক সাহেদুল ইসলাম, রতন বড়ুয়া ও গাড়ি চালক আনোয়ার হোসেন মামলা সংক্রান্ত রিপোর্ট করার জন্য পটিয়া থানায় গেলে ওসি নেয়ামতসহ বাকি আসামিরা তাদের আটক করে নির্যাতন চালায় এবং ক্যামেরা, গাড়ি, মোবাইলসহ সব কেড়ে নেয়। মামলায় আরো বলা হয়, সহকর্মীদের মুক্ত করার জন্য রাশেদুল ইসলাম ওসিকে ফোন দিলে ওসি নেয়ামত অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং সাংবাদিকদের ছাড়ানোর জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে। আর টাকা না দিলে মামলায় নাম ঢুকিয়ে দেয়া হবে বলেও হুমকি প্রদান করে। এরপর চ্যানেলের চেয়ারম্যান আজগর আলি মানিক ওসিকে ফোন দিলে তিনি তার নিকটও মোটা অংকের টাকা দাবি করে নতুবা রাশেদুল ইসলামকে তার হাতে তুলে দিতে বলেন।ওসির কোন শর্তে রাজি না হওয়ায় সিটিজি ক্রাইম টিভির চেয়ারম্যান আজগর আলি মানিক, রাশেদুল ইসলাম, সাহেদুল ইসলাম , রতন বড়ুয়া ও গাড়ি চালক আনোয়ার হোসেনকে আসামি করে ২০ হাজার টাকা চাঁদাবাজি মামলা দেয়া হয় এবং ওসি এখনও নানা ভাবে মামলায় জড়িয়ে দেয়াসহ প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়। মামলার বিবরণীতে আরো জানা যায়, পটিয়া থানার ওসিসহ বাকি আসামিদের অনৈতিক চাঁদা দাবি ও মিথ্যা মামলার ব্যাপারে জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি ও অভিযোগ দায়ের করা হয়। সিটিজি ক্রাইম টিভির চেয়ারম্যান আজগর আলি মানিক জানান,সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা ওসি নেয়ামতের মিথ্যা মামলা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ওসিসহ সকল দোষীদের এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দাও প্রকাশ করেন তিনি। মামলার বাদী সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ওসি নেয়ামতসহ বাকি আসামিরা চাঁদা দাবী, হত্যার হুমকি দেয়া সহ নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে এবং মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে অসম্মান করেছে। তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। বাদীর আইনজীবী রফিকুল আলম বলেন, ওসি নেয়ামত উল্লাহসহ বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে স্পষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাবে। সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম সঠিক বিচার পাবেন এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কোন মন্তব্য নেই