চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির দায়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি সাময়িক বরখাস্ত
এমন হায়দার চৌধুরী, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:: হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির দায়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি শেখ নাজমুল হক কামালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। হবিগঞ্জ শিল্প এলাকার তিনটি প্রতিষ্ঠানে চাঁদা চেয়ে চিঠি দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাজমুল হক কামালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল (১৬ অক্টোবর) এক প্রজ্ঞাপনে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) খলিলুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, এ ঘটনার পুর্বেও তার বিরুদ্ধে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এ যা নিয়ে জেলাজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়।
উল্লেখ্য , গত ১০ অক্টোবর শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি নাজমুল হক কামাল শায়েস্তাগঞ্জের অলিপুরে অবস্থিত তিনটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার কাছে সহযোগিতা চেয়ে পৃথক তিনটি চিঠি লেখেন। ১০ অক্টোবর সই করা ওই চিঠিতে শারদীয় দুর্গাপূজা ও কমিউনিটি পুলিশিং-ডে উপলক্ষে প্রত্যেকের কাছে সাড়ে তিন লাখ চাওয়া হয়। নাশতা, পানীয় ও ফলমূল সরবরাহ করার বিষয় উল্লেখ করে পূজা ও কমিউনিটি পুলিশিং ডের নামে টাকা চাওয়া হয়। একই ফরমেটের লেখা তিনটি
চিঠিতে বলা হয়, ১৪ অক্টোবর শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজা কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতি, কমিটির অন্যান্য সদস্যসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের নিয়ে একটি মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। পূজা সংক্রান্ত ওই অনুষ্ঠানে আপনার উপস্থিতি একান্ত কাম্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজনদের নাশতা এবং আপ্যায়নের জন্য বর্ণিত মালামাল সরবরাহ করে পুলিশের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করার অনুরোধ করা হলো।
চিঠিতে ওসি কামাল খাবারের ছয়টি আইটেমের উল্লেখ করেন। পূজা উদযাপনের নামে কাচ্চি বিরিয়ানি, জিলাপি, মিষ্টি, দই, পানি, বিভিন্ন প্রকার ফলের খরচ বাবদ এক লাখ টাকা চাওয়া হয়। একই চিঠিতে আলাদাভাবে আগামী ২৮ অক্টোবর কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপনের জন্য আড়াই লাখ টাকার মালামাল চেয়ে হিসাব দেওয়া হয়। পুলিশিং ডের কথা উল্লেখ করে প্রত্যেক চিঠিতেই ৫০০ লোকের সমাগমের কথা বলা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজনদের আপ্যায়নে কাচ্চি বিরিয়ানি, কেক, মিষ্টি, পানি ও বিভিন্ন প্রকার ফল রাখার কথা জানানো হয়। কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে ব্যানার, ফেস্টুন, মাইকিং, ফিল্ড ক্যাপও এর মধ্যে ধরা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি চাঁদা চেয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে যে চিঠি দিয়েছিলেন তার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে ওসির চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান কোন ধরনের সাড়া দেয়নি বলেও পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।