জি নিউজ ডেস্কঃ
বাংলাদেশে দাওয়াত তবলিগের কার্যক্রম সুষ্ঠ- সুন্দর ও সুশৃঙ্খলকূলে পরিচালনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কতিপয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাবলিগ জামাতে চলমান দ্বন্দ নিরসনের লক্ষ্যে কতিপয় নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছে।
(আসল তাবলীগ নকল তাবলীগ)
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দেলোয়ারা বেগম স্বাক্ষরিত পরিপত্রে তাবলিগ জামাতের চলমান সংকট নিরসনে তাবলিগের উভয় পক্ষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, অপ্রচাররোধ, একে অপরের প্রতি সহনশীল মনোভাব পোষণসহ বেশকিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
তাবলিগ জামাত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন উল্লেখ করে পরিপত্রে বলা হয়, “সমগ্র বিশ্বে তাবলিগের কার্যক্রম একটি আাজনৈতিক অহিংস, শান্তিপূর্ণ ও সম্পূর্ণভাবে ধর্মীয় কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত। মুসলিম জণসাধারণ তাদের আত্মশুদ্ধি ও ইসলামের দাওয়াতে প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে আসছেন। ”
“এ কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি অন্যতম অগ্রসরমান দেশ বিধায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ মুসলিম জামাত ‘বিশ্ব ইজতেমা’ প্রতি বছর গাজীপুর জেলার টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।” পরিপত্রে বলা হয়েছে।
তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, সম্প্রতি এ সংগঠনের মধ্যে দৃশ্যমান বিভক্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে এ শান্তিকামী সংগঠনটির দুটি গ্রুপের মধ্যে দেশের প্রায় সকল এলাকায় প্রায়শই বিন্যাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ইহা ধর্মীয় রীতিনীতি তথা সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলার অন্তরায়। তাই দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা, ধর্মীয় সৌহার্দ ও সম্প্রীতি বজায় রাখা তথা সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাবলিগের সংকট নিরসনে সরকারের পাঁচ নির্দেশনা –
১. বর্তমানে তবলিগে বিদ্যমান দুটি পক্ষ সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা পরামর্শক্রমে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা ময়দানসহ দেশের সকল জেলা ও উপজেলা মারকাজে সপ্তাহের ভিন্ন ভিন্ন দিনে/তারিখে তাঁদের কার্যক্রম (সাপ্তাহিক বানি ও রাত্রি যাপন, পরামর্শ ও তালীম, মাসিক জোড় ইত্যাদি) পরিচালনা করবে।
তবে কোন পক্ষ চাইলে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে পরামর্শক্রমে মারকাজ ব্যতিত অন্য কোন মসজিদে/জায়গাতেও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
২. তবলিগের আদর্শ ও চিরাচরিত রীতিনীতি অনুযায়ী কোন পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে কোনরূপ লিখিত বা মৌখিক অপপ্রচার চালাবেনা।
৩. দেশের সকল মসজিদে পূর্বের ন্যায় শান্তিপূর্ণভাবে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সে লক্ষ্যে যে কোন মসজিদে উভয় পক্ষের জামাতই যেতে পারবে। এতে কোন পক্ষই কাউকে বাধা দিবেনা।
তবে একই সময়ে দুই পক্ষের দেশী ও বিদেশী জামাত একই মসজিদে অবস্থান করা যুক্তিসংগত হবেনা। এক্ষেত্রে যে পক্ষের জামাত আগে আসবে সেই পক্ষের জামাত অবস্থান করবে। অন্য পক্ষের জামাত পার্শ্ববর্তী অন্য কোন সুবিধাজনক মসজিদে চলে যাবে।
৪.উভয় পক্ষ তাঁদের ইজতেমা/জোড়ে তাবলিগের দেশী-বিদেশী মুরুব্বিদের আমন্ত্রণ জানাতে পারবে। এতে এক পক্ষ অন্য পক্ষের কার্যক্রমে কোনরূপ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন।
৫. কোন এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে কোন বিরোধ দেখা দিলে স্থানীয় প্রশাসন উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।