নালিতাবাড়ীতে চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার।
মোঃজিয়াউল হক শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী আহম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪, জামালপুর। গ্রেপ্তারকৃত আহম্মদ আলী নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঁশকান্দা গ্রামের মৃত হাবিল উদ্দিন ফকিরের ছেলে।
র্যাবের প্রেস রিলিজ সুত্রে জানা যায় ভিকটিমের মা ভিক্ষা করে ও বড় ভাই দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আহম্মদ আলী ভিকটিমের প্রতিবেশী এবং চার সন্তানের জনক ছিলেন। প্রতিদিনের ন্যায় ভিকটিমের মা ও বড় ভাই জীবিকার তাগিদে কাজে বেরিয়ে পরেন। ভিকটিম তার মাকে খুজতে বাঁশকান্দা বাজারে গিয়ে মাকে না পেয়ে একা বাড়ীতে ফেরত আসার সময় আসামী তার পিছু পিছু বাড়ীতে আসে। ঘটনার দিন বাড়ীতে কোন লোকজন না থাকায় আহম্মদ আলী ভিকটিমের বসতঘরে খাটের উপর বসে এবং তাহার কাম লালসা চরিতার্থ করার জন্য ভিকটিমকে টাকা পয়সার ও খাবারের লোভ দেখাইলে ভিকটিম আসামীর কু-প্রস্তাবের অস্বীকৃতি জানায়। একপর্যায়ে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গত ২৭আগষ্ট ২০১৪ সালে রাত আনুমানিক ৮টার দিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করিতে থাকলে ভিকটিম আর্তচিৎকার করিতে থাকে। ভিকটিমের মা বাড়ীতে এসে আসামীকে ধর্ষণরত অবস্থায় দেখলে আসামী ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের মার ডাকচিৎকার করলে আশেপাশের আরো লোকজন এসে ভিকটিমকে ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এহেনবস্থায় ভিকটিমের পরিবার এবং স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করেন।
এ ঘঁটনায় বড় ভাই মো. আনসার আলী বাদী হয়ে আহম্মদ আলীকে আসামী করে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করে। এর পর থেকেই আহম্মদ আলী আত্মগোপনে চলে যায়। আসামী পলাতক থাকা অবস্থায় দীর্ঘ ৮বছর যাবত নিজের পরিচয় গোপন করে গাজীপুর এলাকায় বিভিন্ন মাদ্রাসায় ও বাসাবাড়ীতে আরবি শিক্ষকতা করে আসছিলেন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ বিচারক, জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর গত ১১ অক্টোবর ২০২১ সালে আসামী আহম্মদ আলী উরফে কাশরাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (১) ধারার অপরাধে সন্দেহাতীতভাবে দোষী সাবস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে ও ২০হাজার টাকা অর্থ দন্ড এবং অনাদয়ে আরো ৬মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। পরে র্যাব-১৪, এর একটি চৌকস দল জামালপুর অভিযান চালিয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুর জেলার সদর থানাধীন গাজীপুরা এলাকায় আহম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাকৃত আহম্মদ আলীকে মঙ্গলবার সকালে নালিতাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়।