নিরাপদ সড়করের ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা।

0
74

মাওলানা সাইফুদ্দিন মানিক জি নিউজ ডেস্কঃ আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে মানুষ বানিয়েছেন। আর আমাদের বেঁচে থাকার জন্য তিনি এ বিশ্বকে অসংখ্য নেয়ামত ও অফুরন্ত কল্যাণে সাজিয়েছেন। পৃথিবীতে সুশৃঙ্খল ও আরামদায়কভাবে জীবন যাপনের জন্য আমাদেরকে দিয়েছেন অজস্র নেয়ামত সম্ভার। আর তারই ছোট্ট একটি দৃষ্টান্ত হলো- আজকের আধুনিক যানবাহন ব্যবস্থাপনা। তবে এ কথাও ঠিক যে, যতই প্রযুক্তির ব্যবহার ও এর পরিধী বাড়ছে ততোই এর সঙ্গে মানুষের জীবনের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। এতে পরিবার হারাচ্ছে তার বেঁচে থাকার অবলম্বন, আমরা হারাচ্ছি প্রিয় মানুষ, দেশ হারাচ্ছে মেধা ও সম্পদকে। এক জরিপে প্রকাশ, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ৫৫ জন মানুষ মারা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন মতে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে মারা যায় ২০ হাজার ২৩ জনের মতো। এভাবেই বেড়ে চলেছে প্রতিদিন সড়ক কিংবা মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল। বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনা ও এতদসংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। তাই পৃথিবীর দেশে দেশে গড়ে ওঠেছে যানবাহন ও এতদসংক্রান্ত বিভাগ ও বিধিবিধান। গড়ে উঠেছে যানবাহন চালক বা ড্রাইভারের শিক্ষা, যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও পেশাদারিত্ব বিবেচনায় সহায়ক, শক্তিশালী, উত্তম ও কার্যকর বিধানাবলী। আর এর একটিই উদ্দেশ্য তাহলো, গণমানুষের জানমালের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি যে আমাদের মুক্তি দিতে পারে ১. বেপোরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে। ২. নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর গতকালের বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাতে স্পিড ব্রেকার দিতে হবে। ৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। ৬. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে, থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে। ৭. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবে না। ৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না। পবিত্র ধর্ম ইসলামে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের সব স্তরের মানুষের জানমালের সার্বিক নিরাপত্তার বিধান নিশ্চিত করা হয়েছে। এ জন্য ইসলাম প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও বিধিবিধানও প্রণয়ন করেছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে অত্যন্ত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং যখন অজ্ঞ ও জাহেলরা তাদেরকে ( অশালীন ভাষায়) সম্বোধন করে তখন তারা বলে সালাম।’ –সূরা আল ফোরকান: ৬৩ কোরআনে কারিমের অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আর ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না, তুমি তো কখনই ভূপৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবে না বরং উচ্চতায় কখনই পর্বতসম হতে পারবে না; এগুলোর মধ্যে যা মন্দ তা তোমার পালনকর্তার নিকট ঘৃণ্য।’ –সূরা বনি ইসরাঈল: ৩৭-৩৮ ।হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘… তোমরা রাস্তার হক আদায় করো। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, রাস্তার হক কী ইয়া রাসূলাল্লাহ? তিনি বললেন, দৃষ্টি অবনত রাখা, কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা, সালামের উত্তর প্রদান, সৎকর্মের আদেশ ও অসৎকর্মের নিষেধ করা।’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) অন্যি এক হাদিসে বলেন, ‘মুসলমানদের কোনো পথে বা কোনো বাজারে যদি কেউ কোনো জন্তু দাঁড় করিয়ে রাখে এরপর জন্তুটি যদি সামনের বা পেছনের পা দিয়ে কোনো কিছু মাড়ায় তাহলে মালিক ক্ষতিপূরণ দেবে। -আদদারু কুতনি ।

আপনার মতামত প্রকাশ করেন

আপনার মন্তব্য দিন
আপনার নাম এন্ট্রি করুন