প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী হত্যা, দায় স্বীকার স্বামীর!

0
24

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী হত্যা, স্বামীর দায় স্বীকার!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করেছে স্বামী ঝারু মিয়া। পূর্ব বিরোধের জেরধরে প্রতিপক্ষ মামা শেখ বাদশা মিয়া ও লন্ডন প্রবাসী সালেহ আহমদ গংদের ফাঁসানোর জন্যই নিজের ঘুমন্ত স্ত্রী তহুরা বিবি (৫৫) কে গলা কেটে হত্যা করেছে পাষন্ড স্বামী ঝারু মিয়া। ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক স্বামী ঝারু মিয়া।

শুক্রবার (১৮নভেম্বর) রাতে নিহতের ছেলে আল আমীন বাদী হয়ে সৎ পিতা ঝারু মিয়াকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। শনিবার (১৯নভেম্বর) সকালে আটককৃত ঝারু মিয়াকে বিজ্ঞ আদালতে নেয়া হয়। সেখানে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত তহুরা বিবি নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় চরগাঁও গ্রামের ঝারু মিয়ার স্ত্রী। তহুরা বিবির স্বামী ঝারু মিয়া তার মামা শেখ বাদশা মিয়া’র সাথে প্রায় দুই মাস পুর্বে জমিজমা সংক্রান্ত ও পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়। মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী বিষয়টি শালিসের মাধ্যমে সমাধান করে দেন। উক্ত সমাধানে ঝারু মিয়া অসন্তুষ্ট ছিলেন বলে একাধিক সূত্রে জানাগেছে। সেই থেকেই ঝারু মিয়া তার মামা শেখ বাদশা মিয়া ও লন্ডন প্রবাসী সালেহ আহমদ গংদের ফাঁসানোর জন্য পরিকল্পনা করে।

জিঘাংসা থেকে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টা থেকে ভোর ৫ টার মধ্যে যেকোনো এক সময় ঝারু মিয়া তার ঘুমন্ত স্ত্রী তহুরা বিবিকে দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। ঘাতক ঝারু মিয়া চরগাও গ্রামের মরম আলীর ছেলে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে ঝারু মিয়া নবীগঞ্জ থানায় উপস্থিত হয়ে ডিউটি অফিসারকে জানান, ফজরের নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে তার স্ত্রীকে গলা কাটা অবস্থায় পান। খবর পেয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ ডালিম আহমেদসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেন।

এ সময় পুলিশ সন্দেহজনকভাবে স্বামী ঝারু মিয়া ও তার দু’পুত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।পুলিশ সুপার দীর্ঘ সময় থানায় অবস্থান করে স্বামী ঝারু মিয়াকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক পর্যায়ে রাতেই স্বামী ঝারু মিয়া প্রতিপক্ষকে ফাসাঁনোর জন্য নিজের স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে রাতেই নিহত তহুরা বিবির ১ম সংসারের ছেলে আল আমীন বাদী হয়ে ঝারু মিয়াকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি অপারেশন আব্দুল কাইয়ুম ঝারু মিয়াকে আদালতে নিয়ে গেলে ঝারু মিয়া বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি প্রদান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করলো পুলিশ। ফলে রক্ষা পেলেন নিরাপরাধ শেখ বাদশা মিয়া ও লন্ডন প্রবাসী সালেহ আহমদগং।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ ডালিম আহমেদ বলেন, ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলির নেতৃত্বে লোমহর্ষক এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই