ফেরি পারাপারে অতিরিক্ত ফি আদায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহারী নিয়োগে অনিয়মে দুদুকের অভিযান

0
22

জি নিউজ ডেস্কঃ ফেরি পারাপারে অতিরিক্ত ফি আদায় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহারী কাম দপ্তরি নিয়োগে অনিয়মে দুদুকের অভিযান। দুদক অভিযোগ কেন্দ্র-১০৬ স্বাগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ সারাদেশে ০৬টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ফেরি ঘাট ও কাঠালবাড়ি ফেরী ঘাট পারাপারের গাড়ি-কার্ভাড ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন পারাপারে প্রতি সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-২ এর সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম ও মোহাম্মদ ফজলুল বারীর সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম আজ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে দুদক টিম ফেরির নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রাথমিক সত্যতা পায়। ফেরি পারাপারে অপেক্ষারত যানবাহনের লাইনে সিরিয়াল করাকে কেন্দ্র করে দালালচক্র চালকদের নিকট থেকে বেআইনীভাবে টাকা আদায়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তাগণ দালালদের দৌরাত্বের কারণে তাদের কার্যাক্রম ব্যহত হয় মর্মে জানিয়ে দুদদ টিমের নিকট অসহায়ত্ব প্রকাশ করে। লাইনে দাড়ানো চালকসহ অন্যান্যদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, সরকার নির্ধারিত ফি উল্লেখ থাকলে বাস্তবে চালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা করা হয়। দুদক টিম ফেরি ঘাটে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক করে। দালালচক্রের দৌরাত্ত্ব বন্ধসহ অবৈধ ও বেআইনী লেনদেন বন্ধে ফেরিঘাট এলাকায় সিসিটিভির আওতায় আনাসহ সেবা কাযক্রম সুচারূপে পরিচালনার জন্য জোর তাগিদ দেয় দুদক টিম।

নোয়াখালী চাটখিল উপজেলাধীন বানসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী নিয়োগে ঘুষ, দুর্নীতি ও জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আল আমিন নামীয় এক ব্যক্তিকে নিয়োগের অভিযোগে বানসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজ (২৮/১০/২০১৯ খ্রি.) দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় নোয়াখালীর সহকার পরিচালক সুবেল আহমেদ এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ড-পত্র, অভিযুক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি এবং সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পর্যালোচনায় অভিযুক্ত জনাব আল আমিন, পিতা: মোঃ সেলিম, গ্রাম:বানসা, ডাকঘর: বানসা বাজার, চাটখিল, নোয়াখালী পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদ জাল করে চাকরি নেন মর্মে দুদক টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।

আল আমিন এবং তার বাবা মোহাম্মদ সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান যে, ফাওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক জনাব রুহুল আমিন এবং ফাওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জনাব কিরণ এবং প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত চক্রবর্তী যোগসাজশে অষ্টম শ্রেণি পাসের প্রশংসাপত্র নেন। তার মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, তিনি সর্বোচ্চ ৮৪ নম্বর পেয়ে প্রথম হন হন। তার নিকটতম প্রার্থী ৪৯ নম্বর পান। বানসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আল-আমীন এর অষ্টম শ্রেণীর সনদপত্র ও নম্বরপত্র প্রাথমিকভাবে জাল ও ভুয়া প্রতীয়মান হওয়ায় সেগুলো জব্দ করেছে দুদক টিম।

দুদক টিম শিক্ষক কর্মচারীসহ বিভিন্ন ব্যাক্তির সাথে কথা বলে জানতে পারে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ফাওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন এবং কাওরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জনাব কিরন। নিয়োগ সংক্রান্ত রেকর্ড পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এরকম অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে কমিশনকে প্রতিবেদনের মাধ্যমে অবহিত করা হবে।

এছাড়াও, দুদক অভিযোগ কেন্দ্র-১০৬ এ আগত অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে প্রতিবেদন আকারে অবহিত করার জন্য সিভিল সার্জন-নাটোর, চট্টগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ব্রাহ্মণপাড়া-কুমিল্লা, দাকোপ-খুলনা, সদর উপজেলা-যশোর, জুড়ী-মৌলভীবাজারকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

আপনার মতামত প্রকাশ করেন

আপনার মন্তব্য দিন
আপনার নাম এন্ট্রি করুন