বরিশালসহ সারা দেশে ক্রমাগত নারী অপরাধীর সংখ্যা বাড়ছে। মাদক ও দেহ ব্যবসার অভিযোগে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে নারী গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি শিশু ও মানব পাচার, জঙ্গি সংযোগ, চুরি, অপহরণ, যৌন আবেদনের মাধ্যমে প্রতারণা ইত্যাদি অপরাধে সক্রিয় নারী। সম্প্রীতি ঢাকায় র্যাবের অভিযানে নরসিংদী জেলা যুবমহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়াকে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে এবং আজীবনের জন্য সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বরিশাল নগরীতে এমন অনেক নারী রয়েছে যারা বিভিন্ন অপরাধচক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছে। নগরীর এসব পাপিয়া খ্যাতদের ছত্রছায়ায় রয়েছে প্রায় কয়েক ডজন রূপসী সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে এবং প্রতারনার ফাদে জড়নো গ্রামের সহজ সরল কিছু সুন্দরী নারী। লোভ ও স্বল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমান টাকার মালিক হওয়ার বিভোর স্বপ্নে এইসব অসামাজিক কার্যাকলায়ে লিপ্ত রয়েছে এরা। যদিও এর মধ্যে অনেকেরই স্বামী-সংসার নেই। এদিকে নগরীর ওইসব পাপিয়ারাই নিয়মিত প্রথম শ্রেণির ৪/৫ টি আবাসিক হোটেলগুলোতে অবাধে যাতায়ত করে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। যা হোটেলগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই প্রমান পাওয়া যাবে।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, নগরীর পাপিয়াদের লোভে পড়ে যেসব রূপসী মেয়েরা সামাজিকভাবে লাইনচুত্য হয়েছে তারা বর্তমানে দেহ ব্যবসার পাশাপাশি ইয়াবার ব্যবসা ও সেবন করে বাড়তি আয়-রোজগার করছে। এ চক্রটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একাধিকবার আটক হলেও আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বের হয়ে আবার সরূপে কালো ধান্দায় নেমে পড়ে। যদি এরা খুটিনাটি সমস্যায় জড়ায় তাহলে পুলিশ, সাংবাদিক, ব্যবাসয়ী, প্রভাবশালী নেতার সাথে সখ্যতার পরিচয় দিয়ে হুটহাট ঝামেলা থেকে রক্ষা করে নিজেদের। অপরদিকে স্বামী নামক সাইবোর্ড লাগিয়ে দাবিয়ে দেহ ব্যবসা করে যাচ্ছে নগরীতে বাসা ভাড়া নিয়ে কথিত স্বামী’র সাইনবোর্ড ঝুঁলিয়ে পতিতা ব্যবসা চালায়। মাসে একাধিকবার তারা বাসা পাল্টায়। এদের খপ্পরে পড়ে নগরী ও আশপাশ এলাকার ধর্ণাঢ্য পুরুষরা সর্বশান্ত হওয়ার অভিযোগও রয়েছে। তবে লোক-লজ্জার ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেনা। এসব পাপিয়াদের কারণে বরিশালে নারী ব্যবসা, জুয়া, মাদকসহ নানা কালো ধান্দা চলছে ওপেন সিক্রেট। আর এতে বিপথগামী হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে কিছু রয়েছে ভিআইপি পাপিয়া। উদ্র্ধতন কর্মকর্তা, বড় বড় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে তাদের ওঠাবসা। তারই আড়ালে চলে অবৈধ নানান ব্যবসা। ছোটখাট কেউ তাদেরকে কিছু বলতেই সাহস পায়না।
এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর গোয়েন্দা শাখার সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) নরেশ কর্মকার জানান, মাদক, জুয়া, নারী সিন্ডিকেট, দেহ ব্যবসা ও প্রতারকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং পাশাপাশি এ ধরনের অভিযান বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক দেশজনপদ,