ভোটে নেই বিএনপির যেসব হেভিওয়েট নেতা

0
26

জি নিউজ ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সারাদেশে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। এবারের নির্বাচনে সবগুলো দলের মধ্যে সর্বাধিক বিএনপির প্রার্থীরাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।২৯৫ আসনে বিএনপির ৬৯৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে ২৫৭টিতেই ২-৫ জন করে প্রার্থী আছেন। একক প্রার্থী রয়েছে ৩৮ আসনে।

প্রার্থী বেশি হলেও বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।একই আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।মনোনয়ন পাননি অনেক পোর খাওয়া নেতারাও।অনেকে মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচন করছেন না।

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্তত ৩জন সদস্য এবার ভোট করছেন না।ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যেও কেউ কেউ নির্বাচন করছেন না।কেউ কেউ মনোনয়নই পাননি।ভোটে না থাকার তালিকায় রয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টারাও। বাদ নেই যুগ্ম মহাসচিব পর্যায়ের নেতারাও।

ভোটে না থাকা নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ মনোনয়ন পাননি।কেউ মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচন করছেন না, কাঙিক্ষত আসন না পাওয়া। আবার কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেও শেষ পর্যন্ত মাঠ ছেড়ে দাঁড়িয়েছেন।এমন নেতাদের মধ্যে রয়েছেন-দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.)মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ।রয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, গাজীপুরের সাবেক মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। এ জেড এম জাহিদ হোসেন মনোনয়ন পেলেও সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় ভোট করতে পারছেন না।গিয়াস কাদেরের আসনে তার ছেলেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে রয়েছেন-অধ্যাপক মামুন আহমেদ। আমান উল্লাহ আমান ও মশিউর রহমান মনোনয়ন পেলেও হাইকোর্টের রায়ে নির্বাচন করতে পারছেন না।

যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে রয়েছেন-রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবিব-উন নবী খান সোহেল।তারা সবাই একাদশ সংসদ নির্বাচনে দর্শক।বিএনপির রাজনীতিতে এদের সবারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।দলের সঙ্কটে সামনে থেকে দলের নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছেন।

এদের বেশিরভাগেরই নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।বাকিরা আগে নির্বাচন না করলেও এবার করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। দলের চার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকও মনোনয়ন নিয়ে ক্ষুব্ধ।তারা হলেন- মাহবুবুল হক নান্নু, আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান, সেলিমুজ্জামান সেলিম ও মাশুকুর রহমান।

মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন-সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমদ (লক্ষ্মীপুর-১) ও হারুন অর রশিদও (চাঁদপুর-৪)। তারা দু’জনই ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন।

দলের মনোনয়নপত্র নেননি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, রুহুল কবির রিজভী। মনোনয়নপত্র তুলেও নির্বাচন করছেন না যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল। আবার সাবেক এমপিসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েক নেতাকে মনোনয়ই দেয়া হয়নি। নজরুল ইসলাম নির্বাচন না করলেও তাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নির্বাচন না করা প্রসঙ্গে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমার কখনই নির্বাচন করার শখ ছিল না। পরিবারের মধ্যে আমার বাবা-ভাই নির্বাচন করেছেন। অতীতে আমি কখনও নির্বাচনে অংশ নেইনি। এখন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। দলের নেতাকর্মী-সমর্থকরা গ্রেফতার-মামলা-হয়রানির মুখে পড়ছেন প্রতিনিয়ত।

এরকম অবস্থায় আমি মনে করেছি, নির্বাচনে অংশগ্রহণের চেয়ে নির্বাচন পরিচালনায় আমার সময় ও অবদান রাখা উচিত। সেজন্য দলের বৃহত্তর স্বার্থে আমি নির্বাচন না করে দলের নির্বাচনী কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কারণ নির্বাচন পরিচালনায় দলে এখন পর্যাপ্ত ও অভিজ্ঞ লোকজনের অভাব রয়েছে। সেজন্য আমি মনে করছি, দলের এরকম গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নির্বাচন করার চেয়ে নির্বাচনী কাজে সময় ও শ্রম দেয়া জরুরি। তিনি বলেন, দলও মনে করে যে নির্বাচন পরিচালনার কাজে আমি সম্পৃক্ত থাকি। আমর মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে যেসব খবর গণমাধ্যমে আসছে তা সঠিক নয়। এ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি মহল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. মাহবুবুর রহমানও নির্বাচন করছেন না। তিনি দিনাজপুর-২ আসন থেকে দু’বার দলের মনোনয়ন পান। একবার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন। নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তাই নির্বাচন করছি না।

বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ মান্নান চেয়েছিলেন গাজীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচন করতে।গত সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত মান্নানকে সংসদ নির্বাচনও মূল্যায়ন করা হয়নি। তবে তার ছেলে মঞ্জুরুল আলম রনিকে যৌথভাবে ওই আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর.কম।

কোন মন্তব্য নেই