মাদক বিরোধী অভিযান! একজন নিরিহ লোকও যেন হয়রানি না হয়। নয়টা ১০-১৫ দিকে বাসা থেকে বের হচ্ছিলাম। হেঁটে গিয়ে মেইন রাস্তায় উঠতেই চার জন পুলিশ পথরোধ করলো। জিজ্ঞেস করলাম কী ব্যাপার। বলল চেক করবে। আমি বললাম করেন। এরই মধ্যে সামনে দিকে আরও চার-পাঁচ জন পুলিশ দুইটা ছেলেকে ধরে নিয়ে আসলো। এর মধ্যে একটি ছেলে বার বার বলছিল আমি সিগারেটও খাই না। পুলিশ তার কথায় কান দিচ্ছিল না। ঘটনার মধ্যেই আমার বড় ভাই বাসার রাস্তার দিকে এগুতে নিলে পুলিশ তাকেও দাঁড়াতে বলে। আমার ভাই আমাকে দেখে পুলিশকে জিজ্ঞেস করে কী হইছে আমাকে বলেন। এরই মধ্যে একজন পুলিশ আমাকে জিজ্ঞেস করে কী করেন? আমি বলতে বলতেই আরেকজন এসে আমার প্যান্ট চেপে ধরে। আমি আর আমার ভাই প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদেরকে গালাগালি শুরু করে। কিছুক্ষণ গালাগালির পর আমি বললাম কোথায় যেতে হবে বলেন আমি যাচ্ছি। কিন্তু এভাবে রাস্তার মাঝে হেনস্থা করছেন কেন। তিনি কিছুতেই ছাড়বেন না। আমার ভাই বার বার তার সাথে কথা বলতে চাইলেও তিনি তিনি কোন কথা বলতে নারাজ। হাঁটতে হাঁটতে পুলিশের গাড়ির কাছে গিয়ে তিনি সাথের দুইজনকে অপরাধীদের সাথে গাড়িতে উঠিয়ে দিলেন। আমার ভাই আমার সাথে থাকায় উঠালেন না। ইতোমধ্যে আমার ভাই বেশ কয়েক জায়গায় কল দিয়েছেন সে কারণে হয়তো সাহস করতে পারেননি। পুলিশের গাড়ির সামনে থেকে নিয়ে গেলেন ডিসির কাছে। ডিসি আমার পরিচয় নিশ্চিত করে বললেন ঠিক আছে যাও। আমি তখন পাল্টা প্রশ্ন করলাম এরকম হয়রানি কেন। তিনি কেন গালি দিলেন? তখন সে পুলিশ সরাসরি অস্বীকার করে বললেন তিনি গালি দেননি। বেশ কিছুক্ষণ বাক বিতণ্ডার পরে আমাকে একরকম ঐখান থেকে তাড়িয়েই দিলেন। চলে আসার সময় আমার পাশ দিয়েই প্রিজন ভ্যানটি গেল। ভেতরে অনেকেই চিৎকার করছিল। আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় সে একবার জিজ্ঞেসও করেনি। ভাই না থাকলে হয়তো আমাকেও আজকে গাড়িতে তুলে দিত। আমি শিওর প্রিজন ভ্যানের অধিকাংশ ছেলেকেই এভাবে ধরে আনা হয়েছে। তাদের কথা শুনা তো দূরে থাক, নুন্যতম শব্দ করতে দেয়া হয়নি। যা ইচ্ছা তাই করছে। কথা বলতে গেলেই গালাগালি করছে। এই হচ্ছে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান। যেখানে নিরীহ মানুষের ওপর অমানুষিক অত্যাচার করা হচ্ছে। আর এটাই আমার দেশ! এটাই স্বাধীনতার স্বাদ?? -লিখেছেন : আবু রায়হান, শিক্ষার্থী: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।