গত ২৩/৫/২০১৭ইং শিক্ষা মোলক গঠনা, ফজরের নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠেই দেখি দরজার সামনে লাশের গাড়ী। প্রস্তুতি চলছে লাশ গোসলে নিয়ে যাওয়ার। অবুঝ বালিকাটি আমাকে এসে বললো বালিকাঃ আচ্ছা! আমার আব্বুকে কি আপনারা এখন সাজাবেন? আমিঃ নির্বাক! মাথা নেড়ে বললাম। হ্যা। বালিকাঃ আমার আব্বু না কি আল্লাহর কাছে যাবে? আমিঃ নিশ্চুপ!! বালিকাঃ আমার আব্বুকে মাটিতে রাখবেন? আমিঃ এবারও চুপ। বালিকাঃ আমার আব্বু আল্লাহর বন্ধু! তাই আল্লাহর সাথে দেখা করতে যাবে। হুজুর! আব্বু কি আবার আসবে? আমিঃ হ্যা! আমরা সবাই আল্লাহর সাথে দেখা করতে যাবো। তখন দেখা হবে। বালিকাঃ আব্বু কবে আসবে? আমিঃ আমি অশ্রুসজল চোখে দাঁড়িয়ে রইলাম। তারপর লাশ নামিয়ে যখন গোসল করানোর জন্য নেয়া হয়, বড়রা খাটিয়া কাধে নেয়ায় সে নাগাল পাচ্ছিলো না। তখন খাটয়ার নীচে গিয়ে দুই হাত দিয়ে খাটিয়া ধরে চলতে থাকে লাশ গোসলখানার দিকে। আলোহীন ছবিতে দেখুন। গোসলখানা থেকে বের হতে বললে কান্নাজজুড়ে দেয়। বালিকাঃ বাড়ীতে গোসল করালে আমি থাকতাম। আমিঃ তাহলে তুমি বাড়ীতে গোসলের সসময় থেকো। বালিকাঃ দুইবার গোসল করালে কি ভাল হয়? আমিঃ না, একবারই ভাল। বালিকাঃ আব্বুর শীত লাগবে তো… আমিঃ না, গরম পানী দিবো। পরে বাধ্য হয়েই তাকে সেখানে থাকার সুযোগ দেয়া হয়। যখন জানাজা শেষ হয় তখন মেয়েটি লাশের খাটিয়ার চতুর্পাশে ঘুরতে থাকে। এক পর্যায়ে ওর বাবার পায়ে হাত দিয়ে বলে এটা আমার আব্বুর পা! দেখেন কতো ঠানডা! আদরমাখা কচি হাত পায়ে বুলিয়ে বুলিয়ে বলে আব্বু তুমি আবার চলে এসো। তোমার জন্য আমি আর আম্মু অনেক কান্না করেছি। যখন আমরা বরফ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম তখন সে বলছে বরফ দেন কেন? বললাম গরমতো তাই….. তখন সে খুশিমনে বরফ হাতে নিয়ে এসে দিতে থাকে, তার বিশ্বাসমতে তার বাবাকে বরফ দিলে তিনি গরমে ভাল থাকবেন। আসুন সন্তানকে ভালবাসি! তাকে দ্বীনি পরিবেশে গড়ে তুলি। তাহলে আপনার আমার ইন্তেকালের পরে শুধু বরফ নয়, আমলও করতে শিখবে। হে আল্লাহ! সন্তান যদি বাবাকে ভালবেসে গরম থেকে বাঁচাতে বরফ দিতে পারে… তাহলে তুমি জাহান্নামের আগুনের মধ্যে আমাদের ফেলে দিয়ে আগুনের যন্ত্রণা দিয়ো না।