শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে :: হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার যত্রতত্র অবাধে বিক্রি হচ্ছে এলপিজি সিলিন্ডার। শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার পুরাণবাজারে রয়েছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ডিলারদের ব্যবসা। সেখান থেকে পাইকারী মূল্যে গ্যাসের সিলিন্ডার ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতা দোকানিরা। পৌর এলাকার নতুনব্রীজ, পুরাণবাজার, দাউদনগর বাজার, আলীগঞ্জ বাজার, সুতাং বাজারসহ আশপাশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এ এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনেক খুচরা এলপি গ্যাস বিক্রেতারা সংশ্লিষ্ট আইন বিষয়ে একেরারেই অজ্ঞ। খুচরা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশির ভাগই আইনগত বাধ্যবাধকতা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এলপি গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর ডিলাররা বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স নিলেও খুচরা বিক্রেতারা কোন আইন অনুসরণ না করেই অবাধে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন। সাধারণত উৎপাদনকারীর কারখানা থেকে ডিলার হয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে এলপি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার পৌঁছায়। এক্ষেত্রে উৎপাদনকারীরা ডিলারদের কাছে সিলিন্ডার সরবরাহের ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদের বিষয়টি যাচাই করেন।
যদিও আইন অনুযায়ী ১০টির বেশি এলপি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার দোকানে রাখলে যেকোনো ব্যবসায়ীর বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক। (সংশ্লিষ্ঠ বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর ‘দ্য এলপি গ্যাস রুলস ২০০৪’-এর ৬৯ ধারার ২ বিধি অনুযায়ী, ‘১০(দশটি) গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুদকরণে লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই’। অর্থাৎ ১০টির বেশি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুদের ক্ষেত্রে লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। একই বিধির ৭১ নং ধারায় বলা আছে, আগুন নিভানোর জন্য স্থাপনা বা মজুদাগারে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম মজুদ রাখিতে হইবে)তার পরও প্রত্যন্ত অঞ্চলের খুচরা বিক্রেতারা জানমালের ঝূঁকি জেনেও সনদ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরজমিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই স্থানভেদে ৩০ থেকে শুরু করে ৭০-৮০টি এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দোকানে রেখেছেন খুচরা বিক্রেতারা। এলপি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার বিক্রির ক্ষেত্রে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য অগ্নি র্নিবাপক ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক হলেও তা মানছেন না খুচরা বিক্রেতারা। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চোখে পড়লেও জনস্বার্থে তা সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন সচেতন মহল। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সমস্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ জোরালো করতে পারলে অকস্মাৎ বড় ধরণের অগ্নিকান্ডে প্রাণ ও সম্পদহানি থেকে জনসাধারণ রেহাই পাবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।