শ্রাবণ তোমায় সম্ভাষণ”রাজলক্ষ্মী মৌসুমী

0
84

শ্রাবণ তোমায় সম্ভাষণ’রাজলক্ষ্মী মৌসুমী

শ্রাবণ তুমি এলে মেঘমালার ডানা মেলে।
তুমি যখন এলে দেখেছি আমি কালিমা মাখা তোমার অবয়ব,– –কী যেনো সুপ্ত বেদনার আভাস তোমার বদনে।
শ্রাবণ তোমার অবিরত বর্ষণে সব কালিমা, দুঃখ বিপর্যয় বিলীন করে দাও।
ঘুচে যাক সব বেদনাভরা রোদন।
শ্রাবণ, কত দেখেছি আগে তোমার বারিধারার স্পর্শে কদম ফুলের ঘ্রাণে বিমোহিত কদমকানন।
প্রেমের বাঁশীর সুর লহরীতে মনোকুঞ্জে আবেগে উদাস হয়ে যেতো মনোপ্রাণ।
রাধা কৃষ্ণের প্রেম কুঞ্জ আলোর দীপ্ততায় কদম কানন মুখরিত হতো।
শ্রাবণের বারিধারায় প্রাণকাড়া অনুভূতি হৃদয়ে জেগে উঠতো শিহরণ।
তবুও জানাই তোমায় আগমনের সম্ভাষণ।
শ্রাবণ তুমি আছো আমার নয়নের কোণে,চিন্তায় মননে।
হঠাৎ বিজলি চমকায় তোমার মেঘমালার গায়ে, —–ওমনি——-
আমার স্বপ্নীল আবেগগুলো কোথায় হারিয়ে গেলো।
অন্ধকার অমানিশায় পৃথিবী ছেয়ে গেছে।
তাই বুঝি তুমি ভোরের সূর্যকে মলিনতায় ঢেকে রেখেছো আপন আঁচলে ।
শ্রাবণ তোমার গতানুগতিক ঝর্ণাধারার আলিঙ্গনের পরশ কী ভোলা যায় বলো?
শ্রাবণ তোমার আগমনে নদী,নালা পুকুর, খালবিল ভরা যৌবনে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
কিন্তু কী যে হলো দিশেহারা আমরা
ভীত মনে স্বচক্ষে দেখে যাই লাশের ষাত্রা।
শ্রাবণ তোমার বুকে বুক মিলিয়ে সাঁতরে
হৃদয়ঙ্গম করা হলো না আমার৷৷৷ তারপর —–
ডানপিটে ছেলেদের কচুরিপনার ফাঁকে লুকিয়ে থাকা
মাছগুলোর সাথে লুকোচুরি খেলা
হলোনা এবার আর।।
ঘন বরষায় টিপ টিপ বৃষ্টি ঝরে পরে সবুজ পাতায়।
এমনি করেই তোমারি ভালোবাসার পরাগ মাখি অতি পরম সোহাগে আমার গায়।
বৃষ্টির রিম ঝিম শব্দ ঝংকৃত হয় সারাবেলা টিনের চালে।।
আমার হৃদয় নাচে অহর্ণিশ বৃষ্টির তালে তালে।
শ্রাবণ তুমি এলে তাই আমি কেবলি কান পেতে শুনি অগোচরে ।
পুকুরের পদ্ম পাতায় তোমার আপ্লুত মহামিলনের স্বর্গীয় ধামের রিনিঝিনি নিক্কণ আর——-
তোমার খরস্রোতা নদীর উচ্ছ্বলিত কলকল ঢেউ
গুলোকে আমি মর্মে মর্মে উপলদ্ধি করি।
শ্রাবণ আমি ব্যাকুল তোমারি জন্যে, তাইতো অকৃত্রিম ভালোবাসা আমার পথের দিশা হারায় কোন এক গোপন আশাতে।
কিসের নেশায় বারিধারার মেঘমালার বুকে তোমায় বার বার আবিষ্কার করি।
শ্রাবণ তুমি এভাবেই আমার জীবনে এসো চির সঞ্জীবনী হয়ে।এমনি করেই ———-
শ্রাবণের ঝর ঝর বরিষণে পাখীরাও আদরে, সোহাগে, জলকেলিতে মত্ত হয়ে বৃষ্টিস্নাত করে অবিরত।
আকণ্ঠ ভালোবাসায় ডানা মেলে নেচে বেড়ায় সারাবেলা।।

কোন মন্তব্য নেই