শ্রীপুরে জনবল সংকটে কারণে বন্ধ হলো সাতাখামাইর রেলষ্টেশনটি

0
33

জি নিউজ ডেস্কঃ গাজীপুরে শ্রীপুরে গুরুত্বপূর্ণ সাতাখামাইর রেলষ্টেশনটি জনবল সংকটের কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সাত দিন যাবত ষ্টেশন মাষ্টার নেই ষ্টেশনটিতে বন্ধ রয়েছে টিকেট বিক্রি। হঠাৎ করে রেলষ্টেশনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা ও ময়মনসিংহে যাতায়াত করা নিয়মিত যাত্রীদের টিকেট ছাড়া ট্রেনে ভ্রমনকরে পড়তে হচ্ছে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে এবং পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ।গত ৭ জুলাই সাতখামাইর রেল ষ্টেশনের ষ্টেশন মাষ্টারকে একই উপজেলার রাজেন্দ্রপুর রেলষ্টেশনে বদলী করা হলে ষ্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রাণহীন হয়ে পরে রেলষ্টেশনটি।স্থবির হয়ে পরেছে রেলষ্টেশনটিকে ঘিরে গড়ে উঠা ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো। যাত্রীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ষ্টেশনটি পুনরায় চালুর জন্য দাবি জানিয়েছেন।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও স্থানিয় সুত্রে জানাযায়, ব্রিটিশ আমলে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ নির্মিত হয়। এই রেলপথে শ্রীপুর রেলষ্টেশন থেকে সাতাখামাইর রেলষ্টেশনের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার।অতীতে লোকাল ট্রেনের প্রায় সবগুলো এই ষ্টেশনে যাত্রাবিরতি করতো।যাত্রীরা এখান থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করতো। ধীরে ধীরে তার সংখ্যা কমিয়ে সর্বশেষ আপ এবং ডাউনে বলাকা এক্সপ্রেস ও ভাওয়াল এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেন এই ষ্টেশনে যাত্রবিরতি করে। ষ্টেশনটি চালুর রাখার জন্য তিনজন ষ্টেশন মাষ্টার থাকার কথা থাকলেও দুইজন ষ্টেশন মাষ্টার দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চলছিল এর কার্যক্রম।এখানে কর্মরত ছিলেন একজন স্থায়ী ও একজন চুক্তিভিক্তিক ষ্টেশন মাষ্টার। সর্বশেষ চুক্তিভিক্তিক ষ্টেশন মাষ্টার মোহান্মদ আইয়ুবের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ায় দায়িত্বভার পরে স্থায়ী ষ্টেশন মাষ্টারে ওপর। কিন্তু একজনের পক্ষে একটি ষ্টেশন পরিচালানা সম্ভব না হওয়ায় ষ্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে এই ষ্টেশন মাষ্টারকে রাজেন্দ্রপুরে বদলী করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।অন্যান্য ষ্টেশনের ন্যায় গত দুই বছর আগে সাতখামাইর রেলওয়ে ষ্টেশনটিও কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ডিজিটাল করা হয়েছিল।

সরেজমিন রেলষ্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, একসময় যাত্রীদের পদচারনায় মুখরিত সাতাখামাইর রেলষ্টেশনটি যাত্রীশুন্য হয়ে পরে আছে।ষ্টেশনের পাশে রেললাইনে গরু ঘাষ খাচ্ছে।মাষ্টারের রুমের বন্ধ দরজার সামনের কক্ষে দেখা মিলল পোটারম্যান ইছব আলীর। পোটারম্যান ইছব অালী বলেন, এখানে সপ্তাহ খানেক আগে ষ্টেশন মাষ্টার বদলী হয়েগেছে। আমারা নামে শুধু পাহারা দিচ্ছি। লোকজন টিকেট চাইলে দিতে পারছি না।

আজিমপুর বাজার কমিটির সভাপতি মো: গোলজার হোসেন বলেন, ষ্টেশনটি বন্ধ হয়ে যাওয়াতে যাত্রিদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। এখান থেকে অনেক ছাত্র-ছাত্রী গাজীপুরে এবং ময়মনসিংহে লেখাপড়া করে তাদের পরতে হচ্ছে বিরম্বনায়।ষ্টেশনটি চালুকরার জন্য কতৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।

ষ্টেশন মসজিদের সাবেক ইমাম ও ব্যবসায়ী মোঃ রমিজ উদ্দিন বলেন, ষ্টেশন বন্ধ যাত্রি নেই, বেচা বিক্রি নেই এভাবে চললে আমাদের রাস্তায় বসতে হবে।আমরা সরকারের কাছথেকে লিস নিয়ে দোকান করেছি। মূলত ষ্টেশন নির্ভর আমাদের ব্যবসা। আমি এটা চালুর দাবি জানাচ্ছি।

সম্প্রতি বদলী হওয়া ষ্টেশন মাষ্টার আব্দুল করিম জানান, এই ষ্টেশনটি বন্ধ হওয়ার আগে প্রতিদিন আপ-ডাউনে বলাকা এক্সপ্রেস ও ভাওয়াল এক্সপ্রেস এখানে যাত্রা বিরতি করত, এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন শতাধিক যাত্রী ট্রেনে উঠানামা করত। টিকেট বিক্রি থেকেও ভাল আয় হত। যাত্রীদের দুর্ভোগ হওয়া সত্বেও ষ্টেশন মাষ্টারের অভাবেই মূলত ষ্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা রেজাউল হক জানান, গত ৬ জুলাই একসঙ্গে চুক্তিভিক্তিক ১১ জন ষ্টেশন মাষ্টারের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মাষ্টারের অভাবে এই ষ্টেশনটি টিকেট বিক্রি হচ্ছে না। চুক্তিভিক্তিক মাষ্টারদের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী দেড় দু’মাসের মধ্যে ষ্টেশনটি পুনরায় চালু করা যাবে।

উল্লেখ্য, গত সাত বছর আগে জনবল সংকটের কারণ দেখিয়ে একই উপজেলার ইজ্জতপুর রেলষ্টেশনটিও বন্ধ করা হয়।এখনো তা চালু করতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বন্ধ হওয়া রেলষ্টেশনটি চালুর দাবিতে ৪মে মানববন্ধন করেছে স্থানিয় এলাকাবাসী।

কোন মন্তব্য নেই