শ্রীপুরে বিষাক্ত ব্যাটারি কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

0
50

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পূর্ব খণ্ড গ্রামে বিষাক্ত ব্যাটারি তৈরী কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অবিভাবক সহ স্থানিয় এলাকাবাসি।এসময় মানববন্ধন থেকে কারখানা বন্ধের জন্য এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়। আগামী শনিবারের মধ্যে প্রশাসনের উদ্যোগে কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে নিজেদের উদ্যোগেই কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে বলে মানববন্ধন ঘোষণা দেয়া হয়। শনিবার (২৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১ টায় কেওয়া পূর্বখন্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ চত্বরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।এসময় বক্তব্য রাখেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, আলহাজ্ব মো: রমিজ উদ্দিন আহমেদ, এডভোকেট কফিলউদ্দিন আহমেদ, ভবানীপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা কলেজের প্রফেসর জনাব, মো: এমদাদুল হক, গণজাগরন মঞ্চের আনোয়ার হোসেন এবং স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সহ এলাকার স্থানিয় নেত্রীবৃন্দ। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব, মো: রমিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গেলি ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানার একশ ফুটের মধ্য কেওয়া পূর্বখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।এই কারখানায় সিসা পুড়িয়ে তৈরী করাহচ্ছে ব্যাটারি। এসময় বিষাক্ত গ্যাসে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে।দেখা দিচ্ছে কাশি, নাক মুখে জ্বালা পোড়া, বমি, মাথা ঘুরানো ও পেট ব্যথা।বাধ্যহয়ে শিক্ষার্থীরা ছুটি নিয়ে চলে যায়।এজন্য বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ রকম পরিবেশের কারনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। শিক্ষকরাও অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চলে যেতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে লিখিত অভিযোগ করে জেলা প্রসাশকের দারস্ত হয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবকরা।এই কারখানার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ কোন কাজ আসছে না।তাই আমরা মানববন্ধন থেকে যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি গেলি ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানার এই বিষাক্ত লেড অক্সাইড গ্যাস থেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের মুক্তিদিন। প্রফেসর এমাদাদুল হক বলেন, গেলি ইন্ডাস্ট্রিজ নামের ব্যাটারি তৈরির কারখানা কারনে স্কুলের বাচ্চাদের লেখাপড়া নষ্টহচ্ছে। কারখানায় সিসা ও অন্যান্য কেমিক্যাল পোড়ানোয় চরম প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপর।কারখানার পাশে কৃষিজমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, মারা যাচ্ছে গবাদিপশু। কারখানার আশপাশের মানুষসহ জীববৈচিত্র্য রয়েছে চরম হুমকিতে।আমরা এই বিষাক্ত কারখানা বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। এডভোকেট কফিলউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই অবৈধ সিসা তৈরী কারখানার বিষাক্ত গ্যাসে স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক সহ স্থানিয়রা অসুস্থ্য হচ্ছে।বাচ্চারা ঠিকমত স্কুলে আসতে পারছে না।এলাকার কৃষি, ফলজবৃক্ষ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর এর প্রভাব পড়ছে।মাঠে ঘাস খেয়ে গবাদিপশু মারা যাচ্ছে।আমরা এলাকাবাসী এ কারখানা বন্ধের জন্য মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি। সরকারের কাছে এক সপ্তাহের মধ্যে এই বিষাক্ত কারখানা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রাশিদা আকতার জানান, তার মেয়ে গত বুধবার বিদ্যালয় থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দিলে সে সুস্থ হয়। তার মেয়ে কেওয়া পূর্ব খন্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালেয়ের ছাত্রী। এলাকার স্থানিয় কৃষক মো: শহিদ বলেন, জমিতে কাজ গিয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি।এই বৃষ্টিতে এসিড মিশ্রিত বিষাক্ত পানি কৃষি জমিতে ছড়িয়ে গেছে।আমার হাতে পায়ের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।মানববন্ধনে অংশগ্রহন করে এই ব্যাটারি কারখানা বন্ধকরার দাবি করছি। এব্যাপারে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস ছালামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। কারখানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বক্তব্য নিতে গেলে কারখানার ভিতর থেকে জানানো হয় তাদের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার কোন অনুমতি নেই। গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কোন মন্তব্য নেই