শ্রীপুরে স্বামীর দেয়া আগুনে নিভে গেল শিউলীর জীবন

0
119

শ্রীপুর (গাজীপুর)প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে স্বামীর দেয়া আগুনে গৃহবধুর মৃত্যু হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারী) রাতে উপজেলার মুলাইদ গ্রামের মাফিয়া আক্তারের ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিউলি আক্তার (৩২) ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের শুক্কুর আলীর মেয়ে। আর ঘাতক স্বামী সাহিদ হাওলাদার(৩৯) বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার মোতালেব হাওলাদারের ছেলে।

গত নয় বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে উভয়ের বিয়ে হয়। পরে বেশ কিছুদিন ধরে তারা মুলাইদ এলাকায় ভাড়া থেকে স্ত্রী শিউলি ডিবিএল নামক কারখানায় কাজ করত, আর পাষন্ড স্বামী পেশায় একজন গাড়ীর চালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী সাহিদও আহত হওয়ায় তাকে পুলিশের নজরদারীতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

বাড়ির সকলেই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ঠিক সেই সময়ে অনেকটা কৌশলে সবার ঘরের দরজা বাহির থেকে আটকে দেয় পাষন্ড স্বামী সাহিদ হাওলাদার। এর পর প্রবেশ করেন নিজ রুমে সেখানে শুয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্ত্রী শিউলি আক্তার। ঘরে ঢুকেই পেট্রোল ঢেলে শিউলির শরীরে আগুন দিয়ে দেয় পাষন্ড স্বামী। আর এতেই কয়েক ঘন্টা আগুনের লেলিহান শিখার সাথে লড়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে জীবন প্রদীপ নিভে যায় শিউলির।

বাড়ির মালিক মাফিয়া আক্তার জানায়, সোমবার রাত বারটার দিকে আমরা শিউলির ঘর থেকে কান্নার আউয়াজ শুনতে পাই। এসময় ঘর থেকে বের হতে গিয়ে দেখি বাহির থেকে রুমের দরজা আটকানো। দরজা ভেঙ্গে মুমর্ষ অবস্থায় শিউলিকে উদ্ধার করে থানায় সংবাদ দেয়া হয়। পরে থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ে যাওয়া হয় সেখানেই সে মারা যায়।

তিনি আরো জানান,স্বামী সাহিদের পূর্বের সংসার রয়েছে আর শিউলিরও এটি ছিল দ্বিতীয় সংসার। শিউলি-সাহিদ দম্পতির সংসারে প্রায়ই কলহ লেগে থাকত। প্রায় সময় শিউলির স্বামী তাকে মারধর করত। সোমবার রাতেও কারখানা থেকে পাওয়া শিউলির বেতন স্বামী কেড়ে নিতে চাইলে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক জানান, মঙ্গলবার রাতে আহতবস্থায় শিউলিকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে সে মারা যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী সাহিদ স্ত্রীর শরীরে আগুন দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন, তবে সেও আগুনে আহত হওয়ায় পুলিশী নজরদারীতে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

কোন মন্তব্য নেই