৭০ বছরের বৃদ্ধার উপর সন্ত্রাসী উপর হামলা।
আনোয়ার হোসেন বিশেষ প্রতিনিধি –
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার বৈরাগীর চালা গ্রামে আয়েশা বেগম(৭০) এর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রবিবার রাত আনুমানিক ৯ টায় তার বসত বাড়ীতে প্রতিবেশী মোঃ ফখরুল ইসলামের ছেলে নাঈম মিয়া (২৫) দলবল সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এই হামলা করেছে বলে জানা গেছে। হামলায় বৃদ্ধা আয়েশা বেগমের ডান হাত ভেঙে যায়। সরকারি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে পুলিশ এসে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় শ্রীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে প্রেরণ করে। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে রাতেই পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। শ্রীপুর হাসপাতালের জরুরী বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। এক্সরে রিপোর্টে দেখা গেছে রোগীর ডান বাহুর হাড় ৩ টুকরো হয়েছে, হাড় জোড়া লাগার কোনো সম্ভাবনা নেই, হাত কেটে ফেলা ছাড়া উপায় নেই।
আজ সোমবার সকালে সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির টিনের গেইটে এবং বসত ঘরের টিনের দেয়াল গুলো বিভিন্ন জায়গায় কাটা ছেড়া এবড়ো থেবড়ো হয়ে আছে। গতরাতের সন্ত্রাসী হামলার ছাপ স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। বাড়ির ভেতর গিয়ে দেখা যায়, বৃদ্ধার ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। সুকেশ আলমারির গ্লাস ভাংচুর করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন এসেছে ঘটনার বিস্তারিত জানতে।
বৃদ্ধার ছেলে ওসমান (৩০) এই প্রতিবেদকে জানান, গতকাল দুপুরের পর খবর পাই আমার পৈতৃক জমিতে প্রতিবেশী নাঈম (২৫) দখলের উদ্দেশ্যে মাটি ফেলার কাজ করছে লোকজন নিয়ে। আমি গিয়ে তাদের বাঁধা দিলে তারা লোকজন নিয়ে আমাকে ধাওয়া করে। এতে আমার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে নাঈম সহ তার পরিবারের লোকজন। আমাকে মারধর করতে চায়, আমি প্রাণ ভয়ে চলে আসি। লোকজন জড় হয়ে গেলে তার জমি দখলের কাজ বন্ধ রাখে।
এরপর ঐদিন রাত সাড়ে ৯ টায় তারা আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আমার বাড়িতে হামলা করে। গেইটের সামনে আমার সাথে তাদের দেখা হলে নাঈমের সাথে থাকা পিস্তল দিয়ে আমাকে গুলি করতে উদ্যত হয়। আমি প্রাণভয়ে দৌড়ে বাড়ির ভেতর চলে যাই। ঘরে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে রাখি। আমাকে না পেয়ে তারা বাবা মাকে মারধর করে। তাদের ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে বীরদর্পে চলে যায়। এসময় মায়ের চিৎকার শুনে আমি ৯৯৯ এ ফোন করলে, পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে এবং মাকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে পাঠায়।
অভিযুক্ত নাঈমের বক্তব্য নিতে তার বাসায় গিয়ে পাওয়া যায়নি। অপর অভিযুক্ত বিএনপি নেতা কালামের সাথে কথা হয় মুঠো ফোনে। তিনি জানান, নাঈম আমার মেয়ের জামাই। গতকাল নাঈম ফোন করে জানায় তার জমিতে মাটি ফেলতে বাধা দিচ্ছে প্রতিবেশী আবুল হোসেনের ছেলে ওসমান এবং তার পরিবারের লোকজন। তাই আমি এসে বিষয়টি কথাবার্তা বলে সুরাহার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা কোনো কথা বলতে নারাজ। আমি সহ আমার মেয়ের জামাইকে মারধর করতে চেষ্টা করে। পরে আমি নাঈমকে কাজ বন্ধ করে বাসায় চলে যেতে বলি। আমিও চলে আসি আমার বাড়িতে। রাতের ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো। আমাদের নামে তারা মিথ্যা অভিযোগ করেছে। নিজেরাই এসব ঘটনা সাজিয়ে আমার মেয়ের জামাই নাঈম সহ আমাকে হয়রানি করতে চাইছে। আমি সঠিক তদন্ত করার দাবি জানাই।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা গেছে, এ ঘটনায় বৃদ্ধার মেয়ে শ্রীপুর থানায় অবস্থান করছেন, তিনি বাদী হয়ে বসত বাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা এবং ডাকাতি’র মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানাগেছে।