সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে, এরই মধ্যে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে

0
22

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে। এরই মধ্যে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।দেশে এ পর্যন্ত ১১ টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ টি আসনে জয়- পরাজয় নির্ধারিত হয়েছিল ২৫২ থেকে ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে।এই ভোট কার কাছ থেকে এসেছিল? টাঙ্গাইল জেলার পাশেই সিরাজগঞ্জ জেলাটি।সেখানে সিরাজগঞ্জ -৬ থেকে মহাজোট তথা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ২৫২ ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করে ঠাই পেয়েছিলেন মন্ত্রিসভায়। জয়ী প্রার্থী কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করলেও ২৫২ ভোটে পরাজিত প্রার্থীর কাছে এক যন্ত্রণার নাম হচ্ছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির কি মাত্র একজন মন্ত্রী পাওয়ার কথা ছিল? সাড়ে তিন হাজার সরকারি পদে জাতীয় পার্টি থেকে কয়জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল?

মহাজোট এর শুরু থেকেই প্রধান শরিকদের একটা দূরভিসন্ধি ছিল জাতীয় পার্টি কে বঞ্চিত রাখার। মহাজোট গঠনের শর্ত কি ছিল? জাতীয় পার্টি কে ৬০টি সংসদীয় আসন দিতে হবে।সেই শর্ত বরখেলাপ করে টালবাহানার পর সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হলো ৪৬ টি দেওয়া হবে। পরিস্থিতি শিকার হয়ে পল্লীবন্ধু এরশাদ মেনে নিলেন। এখানেও কারসাজি ৪৬ টি আসন দেওয়ার কথা বলে তার মধ্যে ১৭ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়া হলো। ফলে মহাজোট গতভাবে ২৯ টি আসনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেল জাতীয় পার্টি। এতটা বিশ্বাস ভঙ্গের পরও পল্লীবন্ধু এরশাদ মহাজোটের সাফল্য চাইলেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থীর আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নামলেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে ৬২টি পথসভা- জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন পল্লীবন্ধু এরশাদ, কিন্তু মহাজোটের কোন শরিক দলের নেতার কাছ থেকে জাতীয় পার্টি এই সহযোগিতা পাননি। জাতীয় পার্টি ২৭ টি আসনে জয়ী হলো কিন্তু আওয়ামী লীগের আড়াই শতাধিক আসন থাকা সত্ত্বেও নজর পড়লো ২৭ টি আসনের মধ্যে পল্লীবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া দুইটি আসনের মধ্যে উপ নির্বাচনে একটি কেড়ে নিলেন।

এতকিছুর পরেও যদি দেশ সঠিকভাবে পরিচালনা হত তাহলে জাতীয় পার্টির মেনে নিত। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে লাগামহীন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি,মেগা প্রকল্পের নামে হরিলুট,ব্যাংক লুট, বিদেশে টাকা পাচার, ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া, বিরোধীদের দমন নিপীড়ন, গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র, আমলাতন্ত্রে জনগণ আজ দিশাহারা।

দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বিভিন্ন জনসভা, মিডিয়ায় ও জাতীয় সংসদে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জনবন্ধু জি.এম কাদের এর বক্তব্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেওয়ায় ইতিমধ্যে জনগণের মাঝে প্রশংসনীয় হয়েছে, প্রমাণিত হয়েছে জাতীয় পার্টি জনগণের দল। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণ এখন জি. এম কাদের কে নিয়ে আশায় বুক বেধেছে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে আপদ আর বিএনপি হচ্ছে জনগণের কাছে বিপদ।জাতীয় পার্টিই জনগণের একমাত্র বন্ধু।

পিছনের যত গ্লানি, যত ব্যর্থতা সব মুছে দিতে প্রয়োজন জি.এম কাদের এর মত স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন, সৎ রাজনীতিবিদ। গণ মানুষের সাধনার ধন পল্লীবন্ধু এরশাদ এর আদর্শের ও রক্তের সুযোগ্য উত্তরসূরী জি.এম কাদের মানুষের নয়নমনি হয়েই রাতের ঘন তমসার মধ্যে আলোর দিশারী হয়ে জ্বলে উঠবেন এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক নিরাপত্তা, ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে আনবেন, ইনশাল্লাহ।আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির গণমুখী সিদ্ধান্তে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে পারলেই জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যেতে পারবে। জনগণের ভোটাধিকার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি সরকার মেনে নিলেই এদেশে গণতন্ত্রের নতুন কাব্য রচিত হবে।

নাজমুল হাসান রেজা
তরুণ কলাম লেখক

কোন মন্তব্য নেই