জননেতা রহমত আলী’র ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী-আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক গাজীপুরঃ-
১৬ ফেব্রুয়ারী শ্রীপুরে আজ শোকের দিন, আজকের দিনে প্রিয় নেতা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আজকের দিনের শোক আমাদের আগামীর পথ চলার শক্তিরও উৎস। তিনি আমাদের স্বপ্নের পথ বিনির্মানে আজীবন কাজ করে গেছেন।
তিনি শুধু আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেননা, তিনি শ্রীপুরের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের মানুষ। তাই আজকের দিনটি গুরুত্ব সহকারে পালন করা উচিত শ্রীপুরবাসীর।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রহমত আলী রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারীর রোববারে ইন্তেকাল করেন।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ গাজীপুর-৩ আসন থেকে ১৯৯১ সাল থেকে দশম সংসদ পর্যন্ত পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিতে আমৃত্যু তিনি দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সিনিয়র সদস্য ছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী ১৯৪৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শ্রীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আসর আলী ও মাতা শুক্কুরজান বিবি। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন।
রহমত আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১১ বছর বয়সে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
১৯৬২ সালের ১৭ এপ্রিল শ্রীপুর হাইস্কুল মাঠে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে গ্রেফতার হন।
১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়ে তিন মাস কারাভোগ করেন।
১৯৬৬ সালে ৭ জুন তেজগাঁও শিল্প এলাকায় মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেফতার হোন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের পক্ষে প্রচারণার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কলকাতার ৮ নাম্বার থিয়েটারের সঙ্গে বুশ ও জি ম চ্যাটার্জির সঙ্গে সমন্বয় করে ফ্লাইট কুরিয়ার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭২ সালে ১৯ এপ্রিল ১৯ সদস্যবিশিষ্ট আওয়ামী কৃষক লীগের নবগঠিত কমিটিতে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদ লাভ করেন।
১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শতাধিক বস্তিবাসী পরিবারকে দিনাজপুরে পুনর্বাসিত করেন। ১৯৭৪ সালে কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক হন।
১৯৭৬ সালে ১০ জুলাই মতিঝিলের কমাশির্য়াল কো-অপারেটিভ ব্যাংক থেকে গ্রেফতার হোন এবং ২ বছর ৮ মাস ১৭ দিন কারাভোগ করেন।
১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হয়ে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে নির্যাতন করে তার ১৭টি দাঁত ভেঙে ফেলে দেয়া হয়।
১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী কৃষক লীগের সভাপতির পদ লাভ করেন।
১৯৯০ সালে ২৯ নভেম্বর সরকারবিরোধী আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে গ্রেফতার হন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টিকিটে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে (গাজীপুর-৩, শ্রীপুর-কালিয়াকৈর-১৯৬) সংসদীয় আসন থেকে পর পর বিপুল ভোটে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালের ১ সেপ্টেম্বরে স্থানীয় সরকার কমিশনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের বিশেষ কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন।
মরহুম এডভোকেট রহমত আলী এমপির অভাব কোনোদিন পূর্ণ হবার নয়। কর্মবীর এই মহা মানবের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের ভেতর থেকে দোয়া এবং হৃদয় নিংড়ানো অতল ভালোবাসা।