জি নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সোনার হেরফের নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দাদের গোপনীয় প্রতিবেদন সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও।তিনি বিষয়টির দ্রুত সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্যকে গণভবনে ডেকে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের গোপন তদন্ত সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিষয়টির দ্রুত সমাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও রাজস্ব বোর্ডর চেয়ারম্যানকে গণভবনে ডেকে পাঠান। রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান দেশের বাইরে থাকায় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আন্তর্জাতিক চুক্তি) কালিপদ হালদার বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ প্রদান করেন।প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা সোনার ওজনে ও পরিমাণে গরমিলের অভিযোগ এনে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের দেওয়া একটি গোপন প্রতিবেদন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর দেশ ও দেশের বাইরে থেকে নানাভাবে সমালোচনা করা হচ্ছে। সমালোচনা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। এতে বাংলাদেশে ব্যাংক নিয়ে মানুষের মধ্যে নীতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। অনেকেই প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এমন সময়ে সমস্যাটি সমাধানে প্রধানমন্ত্রী এই পদক্ষেপ নিলেন।
তবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনকে অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরের দিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই ভুলকে ‘ক্লারিক্যাল মিসটেক’ বলে দাবি করেছেন। একই কথা বলেছেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রীও। অর্থ প্রতিমন্ত্রী ১৮ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, ভল্টে রক্ষিত সোনা সব ঠিকই আছে।বিএনপি আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ: ওবায়দুল কাদের:বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের সোনা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উনি অনেক কথাই বলবেন। বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা তুলে দেওয়ার পর তাদের মুখে এটা (সোনা নিয়ে কথা) নিয়ে কথা বলা শোভা পায় না। তারাই আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ। তাদের মুখে অন্যকে দুর্নীতিবাজ বলা শোভা পায় না।বৃহস্পতিবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ স্থল পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তবে আমি এটুকু বলতে পারি, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে এ ধরনের অপকর্ম করার কোন সুযোগ নেই। এখন পর্যন্ত আমরা যেটা জানি, এটা হলো ‘ক্লারিকেল এরর’। এছাড়া যদি ভেতরে কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তার সুষ্ঠু তদন্ত হবে। যদি কেউ অপকর্ম করে থাকেন, তদন্তে বেরিয়ে আসে, তাহলে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।