হবিগঞ্জে আকলিমা হত্যার ৫ দিন পর রহস্য উন্মোচন
এমএইছ চৌধুরী, জুনাইদ। শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ)::
হবিগঞ্জের রাজিউড়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর আকলিমা হত্যার ৫ দিন পর হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে সদর থানা পুলিশ। ঘাতক আনোয়ার হোসেন ওরফে সোবান মিয়া (২৮) আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার গভীর রাতে হবিগঞ্জে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যার নির্দেশে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলামের তত্ত্বাবধানে সদর থানার ওসি মোঃ মাসুক আলীর নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি অপারেশন দৌস মোহাম্মদ ও এসআই সাহিদ, এএসআই জালাল আহমদসহ একদল পুলিশ উচাইল বাজারে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। সে ওই গ্রামের আব্দুল আহাদের পুত্র।
বুধবার (০১ জানুয়ারী) দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় ঘাতক আনোয়ার। স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ওসি মাসুক আলী জানান, শ্রীমঙ্গল উপজেলার জাম্বুরা চড়া গ্রামের হেলাল মিয়ার কন্যা স্বামী পরিত্যক্ত আকলিমা আক্তার (২৫) এর সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় কাঠমিস্ত্রি আনোয়ার হোসেনের। আকলিমা ঢাকার গাজীপুরে একটি গার্মেন্টসে কাজ করতো। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। উভয়েই নিজেদের বিবাহিত থাকার কথা গোপন রেখে গত ৪ মাস যাবৎ শারিরিক সম্পর্ক চালিয়ে যায়। গত ২২ ডিসেম্বর উভয়ের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে কলহের সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে আকলিমা, তাকে বিয়ে না করলে প্রেমের সম্পর্ক ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দেয় আনোয়ারকে। এতে আনোয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে কৌশলে আকলিমাকে টঙ্গী থেকে তার বাড়িতে আসতে বলে আনোয়ার। গত ২৩ ডিসেম্বর আকলিমা রাত ৮টায় এনা বাসে টঙ্গী থেকে অলিপুর এসে রাত ১২টায় আনোয়ারের সাথে তার বাড়িতে যায়। পরিবারের অগোচরে আনোয়ার আকলিমাকে নিয়ে ১ রাত ১ দিন বসবাস করে তার বাড়িতে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে আনোয়ার আকলিমাকে কৌশলে বাড়ির বাহিরে নিয়ে গিয়ে ঝোপের ভিতর গলায় ওড়না পেছিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে বাড়িতে চলে আসে।
গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে সদর থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের জিন্মায় হস্তান্তর করে। লাশ উদ্ধার হওয়ার পরই সন্দেহ হয় এটি একটি হত্যাকান্ড। পরে এনা বাসের টিকিট ও মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সুত্র ধরে ঘাতক আনোয়ার হোসেনকে সনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় আকলিমার বড় ভাই আমির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সদর থানার ওসি আরও জানান, হত্যা মামলার মূল রহস্য উন্মোচন হয়েছে এবং ঘাতক নিজেই তার অপরাধ স্বীকার করেছে। শীঘ্রই তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হবে। আদালতের মাধ্যমে আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।