শ্রীপুরে ধর্ষিতার ঘরে জন্ম নেয় শিশু “অত্যাচার” সামাজিক পরিচয় চায়

0
52

শ্রীপুরে ধর্ষিতার ঘরে জন্ম নেয় শিশু “অত্যাচার” সামাজিক পরিচয় চায়

ব্যারো চিফ গাজীপুরঃ গাজীপুরে শ্রীপুর পৌর এলাকার গিলার চালা গ্রামে ১২ বছরের শিশু ধর্ষিতহলে তার গর্ভে জন্মনিয়ে পৃথিবীতে আসে আরেক শিশু। যার লালন পালন করছেন ধর্ষিতার পরিবার বর্তমান বয়স পাঁচ মাস।তার নাম রাখা হয়েছে অত্যাচার।ময়মনসিংহের পাগলা থানার বীর খারুয়া গ্রামের হাফিজ উদ্দিন তার পরিবার নিয়ে ভাড়া থেকে দিনমজুরের কাজ করেন। নাবালিকা মেয়েকে বাসায় রেখে কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলে
সে ধর্ষিত হয়।

মঙ্গলবার ৭ মে সরজমিনে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেক্সে গিয়ে দেখাযায়, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে একটি শিশু (১২) তার পাশেই ৫ মাসের এক বাচ্চা শুয়ে আছে। বসে আসেন শিশুটির মা ও একটি ছোট ভাই। যে বয়সে শিশুদের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটানোর করার কথা সেই বয়সে তার কোলে নিজের শিশুকে নিয়ে সময় কাটাচ্ছে। এমন এক দৃশ্য দেখা গেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সের মহিলা ও ওয়ার্ডে।

ধর্ষিতা শিশু ও স্বজনদের বক্তব্য এবং থানায় দেয়া অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,গত ২ বছর পূর্বে শিশু (১২) কে মাম্নান হাজীর লম্পট ছেলে জহিরুল ( দোকানদার)বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।পরবর্তী সময় ওই শিশু অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাঁর পিতা মাতা ডাক্তারের নিকট নিয়ে গেলে জানা যায় যে, সে অন্তঃস্বত্ত্বা।তখন ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে যে, জহিরুল কাকা( মান্নান হাজীর ছেলে ) তাকে জোর পূর্বক জঙ্গলে নিয়ে খুন জখমের হুমকি দিয়ে ধর্ষন করে।পরবর্তী সময়ে উক্ত শিশুর গর্ভে ওই ধর্ষকের ঔরষজাত একটি মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহন করে। পরবর্তীতে নাম রাখাহয় অত্যাচার।পরে ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়ে ওই শিশুর পিতা বাদী হইয়া শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার নং- ৫৫, তাং২৩/০৯/২০১৮ইং ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ৯(১) রুজু হয়। এতে আসামী গ্রেফতার হয় এবং পরবর্তী সময় বিজ্ঞ আদালত হতে জামিনে বের হয়ে আসে।বাড়ীতে আসার পর সে অন্যান্য সকল আসামীদের কুপরামর্শে পুনরায় ওই শিশুসহ পরিবারকে বিভিন্ন অত্যাচার, মারপিট সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়া আসছে।

ধর্ষিতার পিতা জানান, ৭ মে সকাল আনুমানিক ৮টার সময় জহিরুলের বোনের ( বেদেনার) জামাই জাহিদ সহ আরও দু তিনজন তার মেয়ে ও ছেলেকে মারধর করে চলে যায়,কিছুক্ষন পর নেত্রকোনা জেলার সদর থানার গাজার কান্দি গ্রামের হাবুল মিয়ার ছেলে সিজান (১৯) বর্তমানে গিলারচালা মান্নান হাজী ওরফে মান্না এর বাড়ীর ভাড়াটিয়াকে দিয়া আমাদের অনুপস্থিতির সুযোগে পূর্ব পার্শ্বের রুমে খাটের উপর জোর পূর্বক ওই শিশুকে ধর্ষন করায়। তখন তার ডাক চিৎকারে আশপাশ হতে লোকজন আসলে শিশুকে এলোপাথারী কিল, ঘুষি, লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। এসময় তাঁর মেয়েকে (অত্যাচার ৫ মাস) খাটের উপর হতে তুলে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুড়ে মারে বলেও জানান তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।

শিশুটির নিকট আত্নীয় জড়িনা খাতুন জানান, বিষয়টি সংক্রান্তে স্থানীয় কাউন্সিলর জিলাল উদ্দিন দুলাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমাকে ঘটনার বিষয়ে মিমাংসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা অফার করে। এছাড়াও রাজি না হলে এ ঘটনা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলেন তিনি।

এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ৫নং ওয়াডের কাউন্সিলর জিলাল উদ্দিন দুলাল জানান, এটা আমার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার সুষ্ঠ বিচার চাই।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সাদি বলেন, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে প্রথমবার শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। যাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল তার ডিএনএ টেস্ট করে অভিযোগের সত্যতা পাইনি। তবে দ্বিতীয়বার সেজান নামের একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।সেজানেরও ডিএনএ টেস্ট করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সাদি।

আপনার মতামত প্রকাশ করেন

আপনার মন্তব্য দিন
আপনার নাম এন্ট্রি করুন