জি নিউজ ডেস্কঃ রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রকাশ্যে ভোট ডাকাতি ও কারচুপির অভিযোগ করেছেন বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তাই এ নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা কাছে অভিযোগ দাখিল করে এ দাবি জানিয়েছেন তিনি। সম্পূর্ণ অবৈধ, প্রহসনমূলক ও নির্বাচনের নামে নাটক করা হয়েছে অভিযোগ করেন তিনি। সোমবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় নগরী দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন বুলবুল বলেন, ভোট ডাকাতির মাধ্যমে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগের ১৩টি কারণ উল্লেখ করে বলেন,‘রিটার্নিং কর্মকর্তা ও তার দফতর, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রকাশ্যে অনিয়ম, বেআইনি কার্যকলাপ এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে।
যেগুলো লিখিতভাবে বারবার জানানো হয়েছে এবং মৌখিকভাবে ও মিডিয়াতে জানানো হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০টি অভিযোগ জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনও পদক্ষেপ না নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা। আর সরকার দলীয় প্রার্থীর পছন্দমতো বেছে বেছে কট্টর আওয়ামীপন্থী প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। লিখিতভাবে আবেদন করার পরও নির্বাচন কমিশন থেকে তার তালিকা দেওয়া হয়নি। সোমবার প্রিসাইডিং অফিসার,পুলিশ প্রশাসন,সরকার দলীয় কর্মী সমর্থকরা যৌথ ও বেআইনিভাবে ৩৭টি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের গ্রহণ করেননি এবং তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
এছাড়া সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা আরও ৭৭টি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের জোর করে বের করে দিয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসাররা এজেন্টদের ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারের হিসাব দেয়নি এবং তাদের কাছে রক্ষিত ফর্মে আমাদের এজেন্টদের স্বাক্ষরও নেয়নি। যা নির্বাচনি নিয়মের পরিপন্থী। ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে যেসব এলাকায় বিএনপির ভোটার বেশি এরকম ২০টি ওয়ার্ডে ভোটারদের মেরে বের করে দেওয়া হয়। কোথাও কোথাও ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিয়ে ভোটারদের তাড়িয়ে দেওয়া হয় যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি এবং নির্বাচন বিধিমালা এবং সংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন। প্রায় ১০-১১টি কেন্দ্রে আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে ভোট গ্রহণকালে দেখা যায় ব্যালট পেপার শেষ হয়ে গেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে সেগুলো দিয়ে জাল ভোট দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ভোটাররা মেয়র পদের ব্যালট ছাড়াই শুধুমাত্র কাউন্সিলর পদের ব্যালটে ভোট দেয়।
এছাড়াও সকাল ১১টায় প্রায় ৩৫টি, ১২টায় মোট ৪৮টি এবং দুপুর ১টার মধ্যে ১৩৮টি কেন্দ্রে আমাদের পোলিং এজেন্টদের বলপূর্বক তাড়িয়ে দিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার,পুলিশ বিভাগ এবং আওয়ামী লীগ যৌথভাবে ৮২টি কেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে দখল করে নেয়। তারা সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নজিরবিহীন জালিয়াতি শুরু করে। বিভিন্ন কেন্দ্রে আমাদের প্রায় ৫০জন কর্মীকে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে লাঞ্ছনা ও মারধরের স্বীকার হতে হয়। যাদের মধ্যে ২জনসহ আরও ৬-৭ জনের অবস্থা গুরুতর। গুরুতর আহতের মধ্যে রয়েছেন ১১ নং ওয়ার্ডের বিএনপি কর্মী রকি,রাকিব। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগে আংশিক ব্যালট ভর্তি বাক্স প্রিসাইডিং অফিসারের বুথ থেকে পুলিশের সহযোগিতায় পোলিং এজেন্টদের বাধা উপেক্ষা করে জাল ভোট দেওয়া হয়।
ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিকেল ৪টায় প্রিসাইডিং অফিসার এবং পুলিশ আমাদের সব এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালট পেপার,ব্যালট বাক্স নিজ হেফাজতে নেয় এবং ব্যাপকভাবে জাল ভোট দেয়। অভিযোগগুলোর বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার,সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের অভিযোগ জানালে তারা কর্ণপাত করেনি এবং আমলে নেয়নি। আমাদের এসব অভিযোগ ছাড়াও আরও অভিযোগ রয়েছে,অভিযোগের স্বপক্ষে দাবি ও তথ্যপ্রমাণাদি আছে যা তদন্ত বা বিচারকালে উপস্থাপন করা হবে।