সৌদি আরব-পাকিস্তান সম্পর্ক পুনঃবিন্যাস,সুবিধা হারাচ্ছে ভারত।
ইরান,তুর্কী,মালয়শিয়া ও কাতারকে জড়িয়ে সৌদিআরবকে বাগে নিয়ে এসেছেন ইমরান খান।
মজার বিষয় হলো,সৌদিআরব ৪০_লাখ পাকিস্তানীকে এক্সপেল করে সেই জায়গায় বাংলাদেশীদের বসানোর হুমকি দিয়েছিলো এখন সেই জায়গা থেকে সরে আসতে শুরু করেছে,কিন্তু সৌদিআরব বাংলাদেশকে অনেক ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় ভারত নির্ভর মনে করে,যার দরুন এখন ভারত,বাংলাদেশ বাদ দিয়ে পাকিস্তানের দিকে বিভিন্ন বিষয়ে এক্সট্রা নজর দিতে চাচ্ছে সৌদি আরব!!
সৌদি আরব-পাকিস্তান সম্পর্ক পুনঃবিন্যাস করার লক্ষ্যে ২৬ ডিসেম্বর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান বিন আবদুল্লাহ এক দিনের সফরে পাকিস্তান যান। এতে যা হলো তা এই যে পাকিস্তানকে সন্তুষ্ট করার জন্য আরো কিছু করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। মোদি সরকারকে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে।
গত সেপ্টেম্বরের ঘটনা মনে করিয়ে দিতে হয়। মোদি সরকারের জম্মু ও কাশ্মিরকে ‘একীভূত’ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করার পর সৌদি আরবের অনেকটাই শীতল মনোভাবের কারণে তুরস্ক ও মালয়েশিয়ার সাথে একটি ইসলামি সম্মেলন আহ্বান করার ধারণা গ্রহণ করে পাকিস্তান।
এর জের ধরেই ১৯-২১ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার রাজধানীতে কেএল শীর্ষ সম্মেলন ২০২০ অনুষ্ঠিত হয়। এর বৃহত্তর এজেন্ডা ছিল সমসাময়িক পরিস্থিতিতে মুসলিমবিশ্বের জন্য নতুন পথ সৃষ্টি করা।
স্বাভাবিকভাবেই সৌদি আরবের মনে হয় যে মালয়েশিয়ার এই উদ্যোগটি মুসলিম বিশ্বে তার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। সম্মেলনের আগ দিয়ে সৌদি বাদশাহ সালমান নজির সৃষ্টি করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদকে ফোন করে বলেন যে ইসলামি ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করার যথার্থ ফোরাম হলো ওআইসি।
অধিকন্তু, কেএল শীর্ষ সম্মেলন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে রাজি করাতে সক্ষম হন। এই অতিনাটকীয়তার বিষয়টিই তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদাগান বলেছেন পরে: আমরা দেখতে পাচ্ছি যে দুর্ভাগ্যজনকভাবে পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে সৌদি আরব। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিষয়টি বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। অবশ্য, এর চেয়েও বড় বিষয় হলো,৪০ লাখ পাকিস্তানি কাজ করে সৌদি আরবে। তাদেরকে হুমকি দেয়া হয়েছে যে এসব পাকিস্তানিকে দেশে ফিরিয়ে দিয়ে এর বদলে বাংলাদেশীদের নিয়োগ করা হবে।
এরদোগানের মতে,অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে পাকিস্তানকে এই হুমকির কাছে নতি স্বীকার করতেই হয়েছে। তবে সৌদি আরবের কোনো ধরনের চাপের কথা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
অবশ্য সৌদিরা ভালোমতোই জানত যে কাশ্মির ইসুতে তাদের উদাসীন মনোভাবের প্রভাব পড়বে। সৌদি-পাকিস্তান সম্পর্কে চড়াই-উৎরাইয়ের ফলে ইরানের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করছে পাকিস্তান।
আঞ্চলিক রাজনীতির এই সন্ধিক্ষণে সৌদিরা কোনোভাবেই তাদের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ুক তা চাইবে না। মুসলিম মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্ক-ইরান-কাতার জোট আত্মপ্রকাশ করলে নিশ্চিতভাবেই সৌদি কর্তৃপক্ষের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করবে।
এরই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানি ভাবাবেগকে আশ্বস্ত করার সবচেয়ে উদার উপহার নিয়ে বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে যান প্রিন্স ফয়সাল। তিনি পাকিস্তানি নেতাদের জানান যে কাশ্মির ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাদশাহ সালমান। আর নজিরবিহীন উদারতা প্রদর্শন করা হয় এই বলে যে ওই সভাটি হবে এপ্রিলে ইসলামাবাদে।
সৌদি নেতৃত্ব কি জানতেন না যে বাদশাহ সালমানের সিদ্ধান্তে ভারত দুঃখিত হবে? তা সত্ত্বেও ভারতের চপলতার চেয়ে পাকিস্তানকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সৌদি আরব।