গাজীপুরে গাছা থানাধীন ডেগের চালা এলাকায় সাজ ইলেষ্ট্রনিক্স লিমিটেড কোম্পানী নামে একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠান খুলে দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেকার আধা শিক্ষিত যুবকদের চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারনার অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪
গত ৩১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতার, ১৫০ জন ভিকটিমকে উদ্ধার ও ৩টি ল্যাপটপ, নগদ টাকা- ১১,২৫,০০০/-টাকা, কোম্পানীর বিভিন্ন দলিলাদি এবং নথিপত্র জব্দ করে র্যাব-৪।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, ১। মোঃ জেলাল শেখ (২১), ২। মোঃ লিমন (৩২), ৩। মোঃ রাশেদ @ জিহাদ মাহমুদ জীবন (২৪), ৪। মোঃ মাসুদ আলম (২০), ৫। মোঃ আবু তাহের (২১), ৬। মোঃ ইসমাইল হোসেন আবির (২৫),৭। মোঃ অসিফ (১৯), ৮। মোঃ আব্দুল লতিফ (৫৯), ৯। মোঃ জিল্লাল (৫৫)।
র্যাব সুত্রে জানাযায়, র্যাব-৪ এর স্পেশাল কোম্পানীর অপারেশন টীম গোপনীয়ভাবে জানতে পারে যে, বেশ কিছুদিন যাবৎ গাজীপুর মোট্রোঃ এলাকায় গাছা থানাধীন ডেগের চালা এলাকায় সাজ ইলেষ্ট্রনিক্স লিমিটেড কোম্পানী নামে একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠান খুলে দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেকার আধা শিক্ষিত যুবকদের চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে তাদের অতিকষ্টে রোজগার করে জমানো অর্থের বিনিময়ে বা দরিদ্র পরিবারের শেষ সম্বল পৈতিক ভিটামাটি বন্ধোক রেখে কখনও কখনও বিক্রি করেও টাকা জোগার করে চাকুরীর প্রত্যাশায় উক্ত কোম্পানীতে টাকা জামা দেয়।
পরে তাদেরকে চাকুরী দেয়ার নাম করে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০,৫০০/- টাকা এবং ভর্তি ফ্রি বাবদ ১,৭৫০/- টাকা প্রতারনামূলক ভাবে আদায় করে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে এবং প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রার্থীদের বিশ্বাস জন্মানোর জন্য তাদের অফিসে বিভিন্ন আকর্ষণীয় পণ্য সাজিয়ে রাখা হয় যা দেখে প্রার্থীরা মুগ্ধ হতে বাধ্য হয়।
প্রশিক্ষনের নামে দিনের পর দিন অসাস্থ্যকর পরিবেশ ও অত্যন্ত সাদামাটা ভাবে খাবার সরবরাহের মাধ্যমে প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে এবং প্রশিক্ষনের সময় ছোট খাট নিতান্ত নগন্য ভুলের কারনে জরিমানার নাম করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো। উক্ত জরিমানার টাকা তাদের মাসিক বেতন হতে কর্তন করে নেওয়া হতো। প্রতি ব্যাচে ১০০/১৫০ জন যুবকদের ০৭ দিনে প্রশিক্ষন দিয়ে এলাকায় পাঠিয়ে আরো প্রার্থী সন্ধান করতে বলে। তখন ভুক্তভোগী নিরীহ যুবকরা এলাকায় গিয়ে নিকট আত্বীয় ও বন্ধুবান্ধবদের উক্ত কোম্পানীতে যোগদানের জন্য প্রভাবিত করে। কিন্তু এযাবৎ কোন প্রার্থীকে চাকুরী দিয়েছে মর্মে কোন নজির নাই। এভাবে হাজার হাজার বেকার যুবকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
প্রাপ্ত সংবাদের উপর ভিত্তি করে উক্ত ভূয়া প্রতিষ্ঠানে র্যাব-৪ এর বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব আনিছুর রহমান এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আক্তারুজ্জামান, পিপিএম(বার) এর সহায়তায় অভিযান চালোনা হয়। অভিযান পরিচালনার সময় প্রশিক্ষনরত অসহায় অভিব্যক্তিপূর্ন কথা গুলো উপস্থিত র্যাব কর্মকর্তাদের নিকট বর্ননাকালে অনেকেই আবেগে কাঁদতে থাকে।
অভিযানের সময় উক্ত প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার, চেয়ারম্যানসহ আরো অনেকেই তাদের পূর্বের তৈরী করা পিছনের গোপন রাস্তাদিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযানের সময় বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মালামাল সমূহ তালিকা করে জায়গার মালিককে বুঝিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়। গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানান র্যাবব।