জি নিউজ ডেস্ক: গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার প্রহ্লাদপুর গ্রামের বনখড়িয়া এলাকায় শালবনের ভেতর থেকে গত ১০আগষ্ট রাসেল মোল্লা নামের এক পোশাক শ্রমিকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের পর নিহতের মা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করে। নিহত রাসেল মোল্লা রাজেন্দ্রপুরের ডার্ট কম্পোজিটের একজন অপারেটর ছিলেন, গত ৮ আগষ্ট কারখানা ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে সে নিখোঁজ হয়।
এদিকে থানায় মামলা রুজু হওয়ার পরপরই হত্যা রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। শ্রীপুর থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম মোল্লা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রবিবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শ্রীপুর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর বাজার থেকে হত্যাকারী ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার বেলতৈল গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আল মামুন (১৯) কে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্য মোতাবেক রাতে গ্রামের হেলিম উদ্দিনের ছেলে ইমান হোসেন (২০)কে তাঁর শ্রীপুর উপজেলা চৌরাস্তা বাজার সংলগ্ন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা ওই এলাকায় ভাড়া থেকে রাজমিস্ত্রী কাজ করতো। তাদের গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যার কথা স্বীকার করে এর বর্ণনা দেন।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম মোল্লা জানান, আসামী আল মামুন ও ইমাম হোসেনদের বাড়ি একই গ্রামের হওয়ার সুবাদে গাজীপুর সদর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর বাজার আরপি গেইটে বাসা ভাড়া নিয়ে এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। রাসেল মোল্লা ও আল-আল মামুন পূর্বে একই গার্মেন্টস কারখানায় কাজের সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরী হয়। এসময় আল মামুনের নিকট হতে কিছু টাকা ধার নেয় রাসেল মোল্লা। তবে সময়মত টাকা না দেয়ায় তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়।
গত ০৮আগস্ট বিকেলে আল মামুন রাসেল মোল্লাকে পাওনা টাকার জন্য ফোন করলে রাসেল মোল্লা আল মামুনকে রাজেন্দ্রপুর বাজারে আসতে বলে। এসময় কথামত আলমামুন তাহার সহযোগী ইমনকে সাথে নিয়ে রাজেন্দ্রপুর বাজারে আসে এবং তাহারা পরিকল্পনা করে বাজারের দোকান থেকে একটি হাতুড়ি কিনে ইমান আলী ইমনের কোমরে গুজে রাখে। সন্ধ্যা অনুমানিক ৭টার দিকে তাদের রাজেন্দ্রপুর বাজারে দেখা হলে রাসেল মোল্লা আল মামুনকে পাওনা টাকা দিবে বলে তার সাথে তাদের বাড়ীতে যেতে বলে। এসময় তারা তিনজন রাজেন্দ্রপুর রেল ষ্টেশন হতে রেললাইন যোগে হেঁটে রাসেল মোল্লার বাড়ী যাওয়ার পথে রাস্তায় তাদের মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়। পরে অল মামুন ও তাঁর বন্ধু ইমন মিলে রাসেল মোল্লাকে ভাওয়াল বনের ঝোঁপের ভেতর নিয়ে হাতুড়ী দিয়ে তার কপাল, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানের উপর্যপুরী আঘাত করে। পরে রাসেল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ইমাম হোসেনের প্যান্টের বেল্ট খুলে গলায় বেধে জোরে টান দেয় এতে রাসেলের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর সাথে থাকা একটি মোবাইল ফোন ও তাঁর বেতনের ৭হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে তারা রাসেল মোল্লাহর মোবাইল বিক্রয় ও সাত হাজার টাকা সমহারে ভাগ করে নেয়।
পুলিশের উপপরিদর্শক আরো জানায়, তাদের গ্রেপ্তারের পর সোমবার সকালে তাদের সাথে নিয়ে অভিযাণ পরিচালনা করা হয়। এসময় তাদের দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ী উদ্ধার করা হয়। পরে দুপুরের দিকে আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধির জন্য গাজীপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়।