জি নিউজ ডেস্ক রিপোর্টঃ
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশী সহ ৩০ জন নি’হত হবার লো’মহর্ষক চা’ঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। বিশ্ব যখন করোনা মা’হামরীতে হিমশিম খাচ্ছে তার ভিতরেও মানব পা’চার ও অ’পহরণ চ’ক্র ত’ৎপর।
তাদেরই নি’র্মমতার শি’কার হলো এই ৩০ জন। তবে, এর মধ্যে বাংলাদেশী ২৫ জন ছিলো জি’ম্মি ও বাকি ৫ জন অ’পহরণ চ’ক্রের সদস্য।
এর মধ্যে বাগেরহাটের শামীম রেজা নামে এক বাংলাদেশী হচ্ছে অ’পহরণ চ’ক্রের নেতা। বাকি চার জনের মধ্যে তিন জন অ’পহরণের সহযোগী লিবিয়ার ভাড়াটে পুলিশ ও একজন আফ্রিকান গার্ড।
ত্রিপোলিতে যোগাযোগ করে জানা গেছে, ৭০ জনের বাংলাদেশী একটি দল লিবিয়ার বেনগাজী থেকে ত্রিপোলির উদ্দেশ্যে রওনা হয় গত ১৯ মে।
এই ৭০ জন এয়ারপোর্ট চুক্তিতে ভারত, দুবাই, মিসর ঘুরে বেনগাজীতে করোনা সংকটের আগে জড়ো হয়। তারপর লকডাউন শিথিল হতে শুরু করলে তারা ত্রিপোলির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কাজের জন্যই তাদের এখানে আসা।
তবে,কেউ কেউ জানান,তাদের লক্ষ্য ইতালি পাড়ি দেয়া। বেনগাজী থেকে রওনা হবার পর এই ৭০ জন বেনুয়ালী চেকপোস্ট পুলিশের হাতে আটক হয়। তাদেরকে থানা আনা হয়।
এরপর মানব পা’চার ও অ’পহরণ চ’ক্রের নেতা বাগেরহাটের শামীম রেজা ও কুমিল্লার শরীফ পুলিশের কাছ থেকে তাদেরকে জনপ্রতি দুই হাজার দিনার বা বাংলাদেশী ৩০ হাজার টাকা কিনে নেয়। তারপর তারা জি’ম্মি করে হতভাগ্য এই ৭০ জনকে।
মু’ক্তিপণ হিসেবে তাদের কাছে জনপ্রতি ১১ হাজার ডলার দাবি করা হয়। তাদের সবাইকে ত্রিপোলি থেকে তিনশো কিলোমিটার দূরে মিজদা মরুভূমির একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়। আটকের পর থেকে চলে অ’মানুষিক নি’র্যাতন।
এই নি’র্যাতনের জন্য ভাড়া করা হয় চার আফ্রিকানকে। পরে বাধ্য হয়ে কেউ কেউ টাকা দিতে শুরু করে। তখন তাদেরকে নি’র্যাতন থেকে রেহাই মিললেও মুক্তি দেয়া হয়নি। বলা হয়, সবার মু’ক্তিপণ আদায় হলে ছাড়া হবে। এদিকে,যারা টাকা দিতে পারেনি তাদের ওপর নি’র্যাতনের মাত্রা আরো বাড়ানো হয়।
এই অবস্থায় অতিষ্ঠ হয়ে আটক জি’ম্মিরা বি’দ্রোহ করার সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহস্পতিবার (২৮ মে,২০২০) সকালে তারা চড়াও হয় শামীম রেজার উপর। শামীম তখন ঘুমিয়ে ছিলো। আটককৃতরা তার কাছে থাকা পি’স্তল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে গু’লি করে।
গু’লিতে শামীম নি’হত হয়। শামীম নি’হত হবার পর বন্দী বাংলাদেশীরা পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তখন আফ্রিকান গার্ডরা মিলিশিয়া নামক ভাড়াটে পুলিশকে খবর দেয়। তখন তারা এসে গো’লাগুলি শুরু করে। বন্দীরাও প্র’তিহত করার চেষ্টা করে। এতে তিন লিবিয়ান মিলিশিয়ান পুলিশ ও এক আফ্রিকান গার্ড মা’রা যায়। অপরদিকে,এই ভাড়াটে পুলিশের হাতে ২৫ জন বন্দী নি’হত হয়। তারা আশেপাশে আত্মগোপনে থাকা বন্দীদের খুঁজে খুঁজে হ’ত্যা করে।গো’লাগুলির ঘটনার পর লিবিয়ার সরকারি পুলিশকে ঘটনাস্থলে আসে। তারা আ’হত গু’লিবিদ্ধ ১১ জনকে কাছের জিলিটন শহর হাসপাতাল নিয়ে আসে। এরপর প্র’তিশোধ নিতে মিলিশিয়া পুলিশের একটি দল তিন দফা হাসপাতালে হামলা করে। কিন্তু,সরকারি পুলিশ তাদেরকে প্র’তিহত করে।
সর্বশেষ অবস্থা হচ্ছে, হাসপাতালটি সরকারি পুলিশ সদস্যরা ঘিরে রেখেছে। ত্রিপোলি থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা হাসপাতালে পৌঁছেছেন। তারা আ’হতদের সাথে কথা বলছেন। তবে, এখনো পর্যন্ত নি’হত বাংলাদেশীদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। দূতাবাসের পক্ষ থেকে সেগুলো জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে বেনুয়ালী চেকপোস্ট পুলিশের ভূমিকা এবং অপহরণ চক্রের মুক্তিপণ আদায় নিয়ে,আর এতগুলো লোক দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এতদূর একত্রিত হলো কি করে???