অবশেষে রিজেন্ট প্রতারক সাহেদ,অস্ত্রসহ সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব

0
42

অবশেষে রিজেন্ট প্রতারক সাহেদ,অস্ত্রসহ সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

প্রতারক_রিজেন্ট_সাহেদ_অস্ত্রসহ_গ্রেফতারঃ
সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটার রামগতি সীমান্ত এলাকা থেকে গোঁফ ফেলে দেয়া,গামছা গলায়,বোরকা পরিহিত,অস্ত্র ও গুলি সহ রিজেন্ট প্রতারক সাহেদ করিম ওরফে গালফোলা বাটপার সাহেদকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব। তিনি ভুয়া রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রতারণা মামলার প্রধান আসামি।

বুধবার ভোরে র‍্যাবের বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্র উপকমিটির নেতা দাবি করতেন। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তিনি এই পরিচয়ে টকশোতে অংশ নিতেন। সাহেদের মা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি রমগতি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে.কর্নেল আশিক বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাঁখরা কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদী তীর সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৫.০০ থেকে ৫.৩০ এর দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নৌকাযোগে নদী পেরিয়ে সাহেদ ভারতে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল। এর আগেও একবার একই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছিলেন তিনি। সাতক্ষীরায় সাহেদের বেশ কিছু অনুসারি রয়েছে। সকাল ৯টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় আনা হবে।

এর আগে রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সরকারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের নমুনা সংগ্রহ করা এবং ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগে ৬ জুলাই র‌্যাব লাইসেন্স না থাকা রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় র‌্যাব বাদী হয়ে সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে মামলা করলে ৯ দিন পলাতক থাকার পর গ্রেফতার হলেন সাহেদ।
ওই মামলায় সাহেদকে প্রধান আসামি করে মোট ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। সে সময় প্রধান আসামিসহ ৯ জন আসামিকে পলাতক দেখিয়ে এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ।

আসামিরা হলেন রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ, রিজেন্ট হাসপাতালের কর্মী তরিকুল ইসলাম, আবদুর রশিদ খান জুয়েল, মো. শিমুল পারভেজ, দীপায়ন বসু, আইটি কর্মকর্তা মাহবুব, সৈকত, পলাশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব (১), হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব (২), হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, অভ্যর্থনাকারী কামরুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক মো. রাকিবুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বণিক, রিজেন্ট গ্রুপের গাড়িচালক আবদুস সালাম ও নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রশিদ খান।

সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে বহুবিধ অভিযোগের মধ্যে আর্থিক প্রতারণা, জাল কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে চাকরি দেয়ার নাম করে অসংখ্য মানুষের কাছথেকে টাকা ও জমি হাতিয়ে নেয়া, ব্যবসায়িক অংশীদার করার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থকড়ি হাতিয়ে নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা পরিচয়ের প্রভাব খাটিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া। উত্তরায় একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট দখল করে হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে ভেতরে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের রমরমা ব্যবসায় চালিয়ে যাওয়া।

অন্যের স্ত্রী ভাগিয়ে নেয়া, রাষ্ট্রের প্রধান থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রী,রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ, অত্যন্ত ক্ষমতাধর সাংবাদিক-মিডিয়া ম্যান, শিক্ষাবিদ ও পাওয়ারফুল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাথে ছবি তোলা এবং তার মতের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া তার সহজাত প্রবৃত্তির মধ্যে অন্যতম।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী প্রতারক সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে এপর্যন্ত ৫৬ টি প্রতারণার মামলা রয়েছে!

আপনার মতামত প্রকাশ করেন

আপনার মন্তব্য দিন
আপনার নাম এন্ট্রি করুন