শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর শহরটি একসময় রেলগেইট থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত এক পলকে সব কিছু খালিই দেখা যেত। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এখন একটি বাহনের পিছনে আর একটি বাহন থাকায় রাস্তাতো দুরে থাক কোন দিকেই যাওয়া সম্ভব না। পথচারীকে রাস্তা পার হতে গেলেও পরতে হয় বিপাকে। দিনদিন বিভিন্ন যানবাহনের সাথে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা আর ড্রাম ট্রাক যুক্ত হয়ে পুরো রাস্তাই দখল করে নিয়েছে তারা। যার ফলে শ্রীপুর মাওনা সড়কের টেংরা রাস্তাার মোড় থেকে হাইস্কুল পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে। আগে রিক্সা দিয়ে চৌরাস্তা থেকে রেলগেইট যেতে সময় লাগত ১ থেকে দেড় মিনিট, এখন অনেক সময় এক ঘন্টায়ও যাওয়া যায়না। যত্রতত্র সিএনজি, অটোরিক্সা ও লেগুনারর ষ্ট্যান্ড সৃষ্টি করে যার যার মত যানবাহনগুলি চালাচ্ছে। এদিকে মরার উপর খারার ঘা। নিয়ন্ত্রনহীন অটো রিক্সা ও ড্রাম টাকের সাথে রেল লাইনের সিগনাল যানজটকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করে তুলেছে।
জানা যায়, ঢাকা ও জামালপুর থেকে শ্রীপুর রেল স্টেশনে গড়ে প্রতিদিন ২৮ টি ট্রেন চলাচল করে। এগুলোর মধ্যে ১২ টি ট্রেন শ্রীপুর স্টেশনে যাত্রা বিরতি দেয় এবং বাকিগুলো বিরতিহীন ভাবে চলে। পাঁচ মিনিটের জন্যও যদি ট্রেন আসা যাওয়ার জন্য সিগনাল ফেলা হয় তবে যানবাহনের কারনে চলাফেরা করায় দু:স্বাধ্য হয়ে পড়ে। আবার অনেক সময় ট্রেন ক্রসিংয়ে পড়লেতো জানজট কমতে কয়েকঘন্টা লেগে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর পৌর শহরে রাজাবাড়ি, বরমি, মাওনা, তেলিহাটি কাওরাইদ, গেসিংগা ইউনিয়নের সহ মাস্টারবাড়ি, ফালুমার্কেট, টেংরা এলাকা থেকে গড়ে কয়েক হাজার অটোরিক্সা চলাচল করে। পাশাপাশি ড্রামট্রাকসহ অন্যাণ্য যানবাহনতো আছেই। অপরদিকে সড়কের দুপাশে অবস্থিত রড সিমেন্টের দোকানসহ পাইকারি দোকান গুলোর সামনে মেইন রোডে ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাক দাঁড় করিয়ে রেখেই মালামাল লোড আনলোড করা হয়। যার কারনে সকাল থেকেই যানজট স্থায়ী ভাবে রুপ নেয়।
উপজেলার সাতখামাইর এলাকার মোমেন প্রধান ঢাকায় চাকরি শেষে সন্ধার ট্রেনে শ্রীপুর রেলস্টেশনে নামেন। পরে অটোরিক্সায় করে যাওয়ার জন্য রিক্সায় উটলে জানজটের কারনে বসে থাকেন প্রায় দেড় ঘন্টা।
কাওরাইদ ইউনিয়নের হযরত আলির পুত্র গাজীপুরের আইনজীবী এড. মোশারফ জানান, তারাতারি বাড়িতে যাওয়ার জন্য ট্রেনে করে শ্রীপুর আসি কিন্তু রেলস্টেশন থেকে অটোরিক্সা দিয়ে শ্রীপুর চৌরাস্তা হাফ কিলোমিটার আসতে সময় লাগে ১ ঘন্টা।
শ্রীপুর বাজারের অনিয়ন্ত্রিত অটোরিক্সার কারনে স্রষ্ট জানজটের কবলে পড়ে সাধারণ মানুষ নাজেহাল হয়ে পড়ছে। এসব অটেরিক্সা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চলাচল না করায় প্রায়সই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এসব বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকসহ সচেতন নাগরিকেরা শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কতৃপক্ষকে একাধিকবার অভিযোগ জানালেও কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছেন। উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় অটোরিক্সা ও ড্রাম ট্রাক নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারে কয়েকবার সিদ্ধান্ত হলেও তার বাস্তবায়ন কাগজে কলমেই রয়ে গেছে।
এদিকে শ্রীপুরের জানজট নিরসনের জন্য গাজীপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ কিছুদিন পূর্বে রেল লাইন পরিদর্শন করে তার ওপর ফ্লাইওভার নির্মান করার আশ্বাস দেন। ফ্লাইওভারটি নির্মিত হলে যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে বলে তিনি আশা করেন।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমা মোস্তারি জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয় ও আমরা পৌর শহরের যানজট নিরসনের জন্য উদৌগ গ্রহন করেছি। খুব শীগ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নব নির্বাচিত পৌর মেয়র আনিছুর রহমান জানান, পৌর নির্বাচনের জন্য যানজট নিরসন করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। খুব শীগ্রই অটোরিক্সা নিয়ন্ত্রনে আনা হবে।