কালীগঞ্জে উপজেলা প্রকৌশলীর দূর্ণীতি ও অর্থ আত্বসাধের তদন্ত শুরু
মোঃ ইব্রাহীম খন্দকার
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন সরকারের বিরুদ্বে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে সীমাহীন দূর্নীতি ও উপজেলার তুমলিয়া, নাগরী ও বক্তারপুর ইউনিয়নের ৬টি প্রকল্পের কাজ না করে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জাতীয় ও স্থাণীয় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর আজ সরেজমিনে তদন্তে নেমেছে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চ. দা.) মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
জানা যায়, উপজেলা পরিষদের রাজস্ব/উন্নয়ন তহবিল হতে উন্নয়ন/মেরামতের নামে বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আতœসাতের বিষয়ে সম্প্রতি জাতীয় দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকাসহ বিভিন্ন স্থাণীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে উল্লেখ করা হয় ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের জুলাই-আগষ্ট মাসে উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের সাতানীপাড়া-জয়রামবেড় রাস্তাটি মেরামতের জন্য এইচবিবি প্রকল্প গ্রহণ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে জঋছ করে ১০ লাখ টাকা, বক্তারপুর-মোহানী ব্রীজ রাস্তায় এইচবিবি প্রকল্প দেখিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে জঋছ করে ১০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে আতœসাত করেন। বর্তমানে জঞওচ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে মেরামত হচ্ছে। কিন্তু বিগত ৮/১০ বছরের মধ্যে এইচবিবি প্রকল্পের মাধ্যমে উক্ত রাস্তায় কোন প্রকার কাজ করা হয়নি।
এছাড়াও উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের পিপুলিয়া দক্ষিণপাড়া আবুল বাসারের কবরস্থান থেকে সামছুলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তাটিতে পুরাতন ব্রিক ফ্যাট সলিং মেরামত কাজ দেখিয়ে ৩ লাখ ৫২ হাজার ২শত ৪০ টাকা, পিপুলিয়া দক্ষিণপাড়া ফারুকের বাড়ী থেকে মোতালেব ভুইয়ার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তায় পুরাতন ব্রিক সলিং মেরামত কাজ দেখিয়ে ২০ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ও পিপুলিয়া মধ্যপাড়া মেইন রোড হতে তাইজদ্দিন ভুইয়ার বাড়ী হয়ে আব্দুল মজিদ ভুইয়ার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তায় পুরাতন ব্রিক সলিং মেরামত কাজের মাধ্যমে ১ লাখ ৭২ হাজার ৪শত ১৩ টাকা পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে জঋছ করে সম্পূর্ন টাকা উত্তোলন এবং আতœসাৎ করেন। অথচ রাস্তাগুলো গত প্রায় ৪ বছর পূর্বে মেরামত করা হয়েছিল। অন্যদিকে তুমলিয়া ইউনিয়নের দারকাভাংগা মেইন রাস্তায় ২টি এপ্রোচ মেরামত (বেডস্ ফিলিং) প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৭ হাজার ৩শত ৪০ টাকা পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে জঋছ করে সম্পূর্ন টাকা উত্তোলন এবং আতœসাৎ করেন। উক্ত প্রকল্পটি ইতিপুর্বে তুমলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু বকর মিয়া নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন্ন করেছিলেন। উক্ত ছয়টি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোটি টাকা উত্তোলন করে আতœসাৎ করেন কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন সরকার।
এ বিষয়টি আমলে নিয়ে গত ১৮ জুন ২০২৩ইং তারিখে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ মহসিন স্বাক্ষরিত এক পত্রে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চ. দা.) মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে সরেজমিনে তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চ. দা.) মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন সরকারের বিরুদ্বে ৬টি প্রকল্পের কাজ না করে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য ১০ জুলাই সোমবার সকালে কালীগঞ্জে আসব।