হবিগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যু-চারজনের বিরুদ্ধে মামলা
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:: হবিগঞ্জ শহরের পৌর বাস টার্মিনাল সংলগ্ন দি জাপান-বাংলাদেশ হসপিটালে এক নারীর টিউমার অপসারণের নামে তার খাদ্যনালি ও জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে। সে সাথে রোগীর কিডনি অপসারন করার অভিযোগে ওই হসপিটালের পরিচালক আরিফ ও চিকিৎসক ডাঃ এস কে ঘোষসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলাটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর গণ্যে রুজু করতে সদর থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকির হোসাইন ।
জানা যায়, হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকির হোসাইনের আদালতে বড় বহুলা গ্রামের মৃত ইউনুছ আলীর পুত্র রহমত আলী বাদি হয়ে দি জাপান হাসপাতালের পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলাম ও ওই হাসপাতালে কর্মরত গাইনি ডাঃ এস কে ঘোষ এবং এ কে আরিফুল ইসলামের ভাই তাবির হোসেন ও ম্যানেজার সিদ্দিকুর রহমান জনি আহমেদকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলাম তাবির হোসেন সাবেক ইউপি মেম্বার কাঞ্চন মিয়ার পুত্র। মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬ (৩) ধারা অনুসারে ওই ৪জনের নামে মামলার এজাহার (এফআইআর) করতে সদর মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দিয়েছেন আদালত। ‘ভুল’ চিকিৎসায় মৃত্যুবরণকারী ওই নারীর নাম রহিমা খাতুন। তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের বাসিন্দা। সোমবার ওই নারীর চাচাতো ভাই রহমত আলী আদালতে মামলার আবেদন করেন। বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সত্যতা আছে মর্মে মামলাটি আমলে নেন । অভিযোগ থেকে জানা যায়, পেটের টিউমার নিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে গিয়েছিলেন রহিমা খাতুন। পরে দালালরা ভুল বুঝিয়ে তাকে দি জাপান-বাংলাদেশ হসপিটালে নিয়ে যান ৷ সেদিন রাতে ডাঃ এস কে ঘোষ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নারীর পেট থেকে টিউমার অপসারণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন দিন থাকার পর তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর রহিমা অসুস্থ হয়ে পড়লে আবার দি জাপান-বাংলাদেশ হসপিটালে আসেন এবং সেখান থেকে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে সিলেটে এমএজি ওসমানী রেফার হাসপাতালে করেন। সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ওই নারীর মৃত্যু হয়।
সিলেটের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে অভিযোগে বলা হয়, অপারেশনের সময় রহিমার খাদ্যনালি, জরায়ু কেটে ফেলা হয়। এ ছাড়া বাম পাশের কিডনি না থাকায় তার মৃত্যু হয় ৷ এর আগেও অবৈধভাবে চিকিৎসা পরিচালনার জন্য দি জাপান-বাংলাদেশ হসপিটালের পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলামকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযোগ রয়েছে- হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসার সাথে সাথে দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেক রোগী ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন।