জি নিউজ ডেস্কঃ গাজীপুরে পিরুজালীতে অবস্থিত হুমায়ুন আহমেদের নুহাশ পল্লীর ভেতরে ও প্রবেশপথে বনের জমির দখল ছাড়তে সাত দিনের সময় দিয়ে এক নোটিশ দিয়েছে বন বিভাগ। এছাড়া ওই দখল উচ্ছেদে সংশ্লিষ্ট বিভাগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে বনবিভাগ। দুদকও বিষয়টি অনুসন্ধান করতে তথ্য চেয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনবিভাগের রাথুরা বিট কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, গত বছর আমার আগের বিট কর্মকর্তা এসএম আনিসুর রহমান নুহাশ পল্লীর ভেতরে আমবাগানে পিরুজালী মৌজার সিএস ৬৭ ও আর এস ৭৩দাগের ৬০শতাংশ বনের জমি সার্ভে করে চিহ্নিত করেন। প্রবেশ পথেও সংরক্ষিত বনের জমি রয়েছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) নির্দেশে সংরক্ষিত বনের জমি রক্ষার্থে সম্প্রতি নুহাশ পল্লীর প্রবেশ পথে খুঁটি পুতে দেয়া হয়েছে এছাড়া আমবাগানে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়ার পর তারের বেড়া দিয়ে নুহাশ পল্লীর সীমানা প্রাচীর ঘেরা অংশ থেকে বনের জমি আলাদা করা হয়েছে। ওই জমিতে নির্মিত জবরদখলকৃত বনভ‚মি, স্থাপনাসহ বাগান সরিয়ে নিয়ে সাত দিনের মধ্যে বনবিভাগের কাছে বুঝিয়ে দিতে বিভাগীয় বনকর্মকর্তার এক নোটিশ মেহের আফরোজ শাওনের কাছে পাঠানো হয়েছে। গত ২৫ আক্টোবর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়েছে সাত দিনের মধ্যে জমি বুঝিয়ে না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ভ‚মি) সঞ্জীব কুমার দেবনাথ বলেন, উল্লেখিত জমি ২নম্বর খাস খতিয়ানের জমি। অর্থাৎ বনের জমি। পিরুজালী মৌজায় আর এস ৭৩ নম্বর দাগে নুহাশ পল্লীতে ৩০শতাংশ বনের জমি থাকার তথ্য জানা গেছে। মেহের আফরোজ শাওন বলেন, আমি বনবিভাগের চিঠিটি ১২নভেম্বর হাতে পেয়েছি। যাতে বলা আছে বনবিভাগের জমিটি দখল ছেড়ে তাদের বুঝিয়ে দিতে। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছি। এ নিয়ে আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। পরিবারের সকলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে প্রাথমিকভাবে নুহাশপল্লীর ভেতরে আমবাগানের অংশটি তাদের বেড়া দিয়ে আলাদা করে দেয়া হয়েছে। আমরা নুহাশপল্লীতে প্রবেশ পথটি কিভাবে একটা নিয়মের মধ্যে আনতে পারেন সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা চেয়েছেন শাওন। তিনি আরো বলেন, হুমায়ুন আহমেদ ১৯৯৬সলে যখন ওই জমিতে নুহাশ পল্লী গড়েন। তিনি যখন সেখানে বিভিন্ন গাছ-পালা ও স্থাপনা নির্মাণ করেন তখন কেউ বলেনি সেখানে বনের জমি রয়েছে। হুমায়ুন আহমেদের জীবিত অবস্থায়ও থাকাকালীন সময়ে এ রকম কোন কথাই আমরা শুনিনি। যখন নুহাশ পল্লীর জমি কেনা হয় তখন হয়ত বিক্রেতারা কোন ভুল কাগজ সরবরাহ করেছে। আমরা তখন ওটা বুঝতেও পারিনি। সম্প্রতি ওই পথে বনবিভাগ খুটি পুতে বড় গর্ত খুড়ে দেয়ায় পর্যটকরা গাড়ি নিয়ে নুহাশ পল্লীর ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে না। বুধবার বদলী হয়ে যাওয়া গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সম্প্রতি নুহাশ পল্লীসহ একাধিক স্পটে বনবিভাগের জমি রয়েছে কিনা দুদক অনুসন্ধানের জন্য তার তথ্য চেয়েছে। সম্প্রতি মেহের আফরোজ শাওন যৌথসীমানা নির্ধারণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন।