জি নিউজ ডেস্কঃ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ৩০ ডিসেম্বর প্রকৃতপক্ষে কোন নির্বাচনই হয়নি। এটা ছিল নির্বাচনের নামে একটি প্রহশন। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে একটা নিষ্ঠুর তামাশা। এই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘকালের যে সংগ্রাম, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের পূর্ব থেকে যে সংগ্রাম, ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধের মূল চেতনা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থায় আমরা দেশকে নির্মাণ করবো, যে মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন আপনাদেরই গর্বিত সন্তান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সেই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়ে আমাদের দীর্ঘকালের সংগ্রামগুলোকে নস্যাৎ করে দিয়ে একটি দল তার নিজেকে ক্ষমতায় ধরে রাখার জন্য আমাদের সমস্ত মূল্যবোধ এবং অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
এসময় মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ এখন গভীর সংকটে। এই সংকট ইতিপূর্বে আর কখনো এসেছে বলে আমার কাছে মনে হয়না। কারণ ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের যে আশা-আকাঙ্খা তাকেই শুধু ধ্বংস করা হয়নি, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটা চরম ক্ষতি। এই ক্ষতিটা হচ্ছে মানুষের আস্থার ক্ষতি, গণতন্ত্রের ক্ষতি, নির্বাচন নামক যে প্রতিষ্ঠান তার ক্ষতি। মানুষ ভাবছে যে নির্বাচন করে আর কি হবে! নির্বাচন কমিশন নামে আর কোন প্রতিষ্ঠান আছে কিনা। এই দেশে নিরপেক্ষতা বলে কিছু আছে কিনা! বাংলাদেশ কি প্রজাতন্ত্র নাকি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা? এই জিনিসগুলো এখন জনগণের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। ফখরুল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই রকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সামনের দিনগুলোতে কিভাবে এগোবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার যে জাতীয়তাবাদ দর্শন তা ছিল স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। এই ভূখন্ডে আমাদের নিজস্ব কৃষ্টি আছে, সংস্কৃতি আছে, নিজস্ব মূল্যবোধ আছে সেটাকে ধরে রাখা।
এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন, ত্যাগের মহিমায় ন্যায় নিষ্ঠার সাথে দলকে সুসংগঠিত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই হবে প্রধান কাজ। তিনি বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করেন না, মূল্যবোধে বিশ্বাস করে না, ভাল কোন দিক বিশ্বাস করে না ।তারা একটাই বোঝে যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে হবে। এজন্য তারা ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পদ্ধতির মধ্যদিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থাকে নসাৎ করেছে। সেখান থেকে আমাদের দেশকে বের করে আনতে হবে। যেখানে নেতৃত্ব দিবেন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।
আমাদের উপর অনেক বড় দায়িত্ব বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করা এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। এই সরকার অনৈতিক ও অবৈধ সরকার। আমরা এই নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছি। দলীয় নয় নির্দলীয় সরকারের অধীনে আবারো নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার গঠন করতে হবে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। দলীয় সরকার বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অধীনে কোন নির্বাচন সঠিক ও সুষ্ঠু হয়না এটাই তার প্রমাণ। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বুধবার দুপুরে দিনাজপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বগুড়ায় যাত্রাবিরতি কালে স্থানীয় একটি হোটেলে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বগুড়াবাসী ও বিএনপি’র নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।সূত্রঃ আমাদের সময়.কম